বিশেষ চক্রের রোষানলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরের দন্ত চিকিৎসক রতন চন্দ্র দাস (৩৪) কে আটক করা হয়েছে। ২৫ জুলাই বুধবার রাতে শহরের বটতলা এলাকাস্থ রতনস ডেন্টাল পয়েন্ট থেকে তাকে আটক করে র্যাব। একই সময় মঞ্জুরুল ইসলাম (২৮) ও শুভ চন্দ্র দেব (২৫) নামে তার ২ সহকারীকেও ওই চেম্বার থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব তাদেরকে ‘ভূয়া ডাক্তার’ বলে দাবি করলেও রতনের পরিবার বলছে তার প্রতিষ্ঠানিক সনদসহ প্র্যাকটিস করার অনুমোদন সংক্রান্ত কাগজপত্র থাকার পরও কেবল একটি বিশেষ চক্রের রোষানলের কারণেই এবারও তাকে আটক হতে হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার রাত পৌণে ৯টার দিকে র্যাব-১৪ (জামালপুর-শেরপুর) ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল শেরপুর শহরের বটতলা এলাকাস্থ ওসমান গণি সুপার মার্কেটে থাকা রতন’স ডেন্টাল পয়েন্টে অভিযান চালায়। ওইসময় ডেন্টাল পয়েন্টের পরিচালক দন্ত চিকিৎসক রতন চন্দ্র দাসসহ মঞ্জুরুল ইসলাম ও শুভ চন্দ্র দেব নামে তার ২ সহকারীকে আটক করে নিয়ে যায় তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাবের তরফ থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিডিএস’র সনদপত্র ও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন না থাকার পরও রতন চন্দ্র দাস নিজেকে দাঁতের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করায় এবং অপর ২ জন ওই কার্যক্রমে তাকে সহযোগিতা করায় তাদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভূয়া পরিচয় ও সহায়তার অভিযোগে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে বৃহস্পতিবার বেলা পৌণে ৩টার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাতে দন্ত চিকিৎসক রতন চন্দ্র দাসসহ ৩ জন র্যাবের হাতে আটকের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়নি ও পাওয়া যায়নি কোন অভিযোগ।
এদিকে ‘ভূয়া দন্ত চিকিৎসক’ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে রতন চন্দ্র দাসের বাবা মন্টু চন্দ্র দাস অভিযোগ করে বলেন, সে (রতন চন্দ্র দাস) গ্রীনভিউ ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজির ডেন্টাল বিভাগ হতে পাশ করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ কর্তৃক সনদ পেয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস ও ক্লিনিক স্থাপনের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের পরিচালকসহ জেলা সিভিল সার্জনের লিখিত অনুমোদনক্রমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ট্রেড লাইসেন্স ও ড্রাগ লাইসেন্স গ্রহণ করে রতন ডেন্টালস পয়েন্ট নামক চেম্বার পরিচালিত করে আসছে। ইতোপূর্বে দন্ত চিকিৎসা সংক্রান্ত পেশায় ঈর্ষান্বিত একটি মহলের যোগসাজসে তার চেম্বারে সিলগালাসহ তাকে আটক করা হলেও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের তদন্তে রতন চন্দ্র দাস বৈধ ডিপ্লোমা দন্ত চিকিৎসক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় একটি পক্ষের দায়ের করা ফৌজদারী মামলায় সে অব্যাহতি পাওয়ার পর ওই পক্ষের বিরুদ্ধে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করায় এবং ওই মামলাটি বর্তমানে বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকায় তাকে আবারও হয়রানীর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেন।
অন্যদিকে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে র্যাব-১৪’র কোম্পানী কমান্ডার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) মাহফুজুর রহমান বলেন, বিডিএস ও বিএমডিসির সনদ ছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগটি খতিয়ে দেখেই রতনসহ তার ২ সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।
