নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জোরপূর্বক টাকা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য ও এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। ২ জুন শনিবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান ও তার চাচী ফেরদৌসী বেগম (৩০)। পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পশ্চিম শাখায় কর্মরত বলে জানা যায়। এদিকে ছিনতাই হওয়া ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারকৃত ২ জনের নিকট থেকে ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল বাজারের বাসিন্দা মোজ্জামেল হক (৪২) একটি খননযন্ত্র কিনতে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে নালিতাবাড়ী পৌর শহরে যান। ওই সময় বৃষ্টির কারণে শহরের গড়কান্দা এলাকায় পূর্ব পরিচিত মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমের বাড়িতে যান। ওইসময় ফেরদৌসীর স্বামীর বড় ভাইয়ের ছেলে ডিএমপি’র পশ্চিম শাখায় কর্মরত পুলিশ সদস্য মো. হাফিজুর রহমান ও তার চাচী ফেরদৌসী বেগম মোজ্জামেলের কাছে থেকে জোরপূর্বক টাকা ছিনিয়ে নেয়। সন্ধ্যায় মোজ্জামেল হক থানায় অভিযোগ করেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ অভিযান চালায়। রাতভর কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমানের কাছ থেকে ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ও ফেরদৌসীর কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ
ওই ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোঃ সুরুজ্জামানের ২ ছেলে ফারুক আহম্মেদ, মারুফ আহম্মেদ ও তার ভাইয়ের ছেলে সেলিম মিয়াকে থানায় নিয়ে যান। পরে তাদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ না থাকায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় পুলিশ সদস্য হাফিজুর ও ফেরদৌসীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাতেই মোজ্জামেল হক বাদী হয়ে ওই ২ জনের বিরুদ্ধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে গ্রেফতারকৃত ফেরদৌসী বেগম থানা হেফাজতে বলেন, মোজ্জামেল আমার বাড়ি খালি পেয়ে হঠাৎ আমার শরীরে হাত দেয়। আমি চিৎকার দিলে হাফিজুরসহ এলাকাবাসি ছুটে আসেন। পরে তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা সবাই ছিনিয়ে নিয়েছে। পুলিশের কাছে সেই টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য’র কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন কিছু না বলতে জোড় হাতে ক্ষমা চান।
মোজ্জামেল হক বলেন, ওই নারী আমার খালাত বোন হয়। বৃষ্টির কারণে তার বাড়িতে গিয়েছি। আমার কাছে খননযন্ত্র কিনতে ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ছিলো। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। ওই ঘটনায় আমি নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেছি। তবে ওই নারী আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম ফসিহুর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ করে ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হযেছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদেরকে বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
