শ্যামলবাংলা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে থাকছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক উচ্চ পর্যায়ের সভার ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয় বলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান।
শহীদুল হক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, কীভাবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করা যায় তা যুক্তরাষ্ট্র দেখবে।’ বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন চলছে তাও ট্রাম্প জানতে চান। এ সময় শেখ হাসিনা ‘ভাল করছে’ বললে ট্রাম্প সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে শহীদুল হক জানান। জাতিসংঘের সংস্কার বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সভার পাশাপাশি ট্রাম্পের সঙ্গে ওই পার্শ্ববৈঠক হয় শেখ হাসিনার।
হাসিনা-ট্রাম্প আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। অ্যান্ড উই সি হাউ ইট ক্যান বি রিজলভড’।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান নিউযুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ শত শত প্রবাসী। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইত্তিহাদ এয়ারওয়েজের বিমানটি জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে অবতরণ করে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দর থেকে ম্যানহাটানের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে যান। এ হোটেলে অবস্থান করেই তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী আগামী বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ সভায় ভাষণ দেবেন। একই দিন তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য মিয়ানমার সরকারেরই নিযুক্ত কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেবেন। এই কমিশন সংঘাত থামিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে। মিয়ানমার এই সুপারিশ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট সেনা-পুলিশের ৩০টি চৌকিতে হামলার পর দমন-পীড়ন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর প্রাণভয়ে স্রোতের মতো বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। এরইমধ্যে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪০ হাজার শিশু বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলোর জোট ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি)।
