স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে শিশু ধর্ষণ চেষ্টা ও তা ধামাচাপা দেওয়ার পায়তাঁরার মামলায় এক ইউপি চেয়ারম্যান, ২ ইউপি মেম্বার ও গ্রাম্য মাতবরসহ ৬ জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে স্ব-স্ব এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে উপজেলার নয়াবিল ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী দেওয়ান, ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী ও আজাহারুল ইসলাম, ধর্ষণ চেষ্টাকারী মৌয়াকুড়া জামে মসজিদের ইমাম ও মক্তব শিক্ষক হাফেজ আজিজুল হক (৬০) এবং মসজিদ কমিটির সদস্য ফুল মাহমুদ ও ইসমাইল হোসেন। ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী দেওয়ান নালিতাবাড়ী উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক। শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোমিনুন্নেছা খানম তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
পুলিশের আদালত উপ-পরিদর্শক (সিএসআই) আব্দুল আজিজ জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ৯ জুলাই রবিবার ধর্ষণ চেষ্টাকারী ইমাম হাফেজ আজিজুল হকের ৩ দিনের রিমান্ড শুনানী এবং একইসাথে আসামী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গ্রেফতারকৃতদের জামিনের শুনানীর তারিখ ধার্য্য করেছে আদালত।
জানা যায়, ৪ জুলাই সকালে নয়াবিল ইউনিয়নের মৌয়াকুড়া মসজিদের ইমাম ও মক্তব শিক্ষক হাফেজ আজিজুল হক (৬০) ওই মক্তবের ৮ বছর বয়সী দ্বিতীয় শ্রেণীর এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় বুধবার রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কয়েকজন মেম্বার এক সালিসী বৈঠক করে ইমামের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করে। পরে ওই ইমামকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে সালিশের সিদ্ধান্তে ভুক্তভোগীর পরিবার সন্তুষ্ট না হয়ে ন্যায়বিচার দাবি করেন। কিন্তু তাদেরকে সালিকারীরা হুমকি-ধামকি এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় শ্যামলবাংলা২৪ডটকমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে উঠে থানা পুলিশ। পরে পুলিশের আশ্বাসে বৃহস্পতিবার রাতে ওই শিশুটির মা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ চেষ্টা ও সহযোগিতার অভিযোগে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফসিহুর রহমান জানান, ৮ বছর বয়সী দ্বিতীয় শ্রেণি পড়–য়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং তা আপস করে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে মূল আসামী স্থানীয় ইমাম ও ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যজনকেও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
