স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ৩ দফা সরকারের সফল কৃষিমন্ত্রী, শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী সময়ের ঘূর্ণাবর্তে ৭৬ বছরে পা রেখেছেন। তিনি ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলার নজিপুর উপজেলার মাহমুদকান্দায় জন্মগ্রহণ করেন।
৭৫তম জন্মদিনে মতিয়া চৌধুরীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের শীর্ষ নেতা, সরকারের মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী সুধীমহলসহ তার নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীরা। এজন্য তার দীর্ঘায়ু কামনা করে শুক্রবার বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির ও গীর্জাতে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলার অগ্নিকন্যা খ্যাত বেগম মতিয়া চৌধুরীর ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে নানা দুর্বিষহ স্মৃতি। একবার-দুবার নয়, ১৫ বার তাকে জেলে যেতে হয়েছে। বছরের পর বছর আত্মগোপনে কাটিয়েছেন। কিন্তু মাথানত করেননি। আর্থিক সমৃদ্ধির প্রলোভন দেখানো হয়েছে। তবুও নিজের অবস্থান থেকে একচুলও নড়েননি। দুঃখ-কষ্টের দিন শেষ করে আজ তিনি ক্ষমতায়। সরকারের মুখ্য ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। সেখানেও তার আদর্শ ও অবস্থান অবিচল। বেগম মতিয়া চৌধুরীর নামটি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারণ করেন। পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন মাদারীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। মা নুরজাহান বেগম গৃহিণী। লেখাপড়ায় হাতেখড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের এক গৃহশিক্ষকের কাছে। পিতার চাকরির সুবাদে মতিয়া চৌধুরীর শৈশব কেটেছে মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও জামালপুর শহরে। ১৯৫৮ সালে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কামরুন্নেসা গার্লস কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিক পাস করেন। কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ইডেন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েটে ও ১৯৬২ সালে বিএসসি পাস করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন পারিবারিকভাবেই খ্যাতিমান সাংবাদিক দৈনিক সংবাদ সম্পাদক বজলুর রহমানের হাতে হাত রেখে নতুন জীবন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ১৯৮৬ সালে দলের কৃষি সম্পাদকের পদ পান। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন হলে তিনি কৃষি, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০০২ সালে প্রথম ও সর্বশেষ ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। সফল এ নেতার জীবনে সবচেয়ে বিয়োগাত্মক ব্যথা নেমে আসে ২০০৮ সালে স্বামী বজলুর রহমানের মৃত্যুতে।
