ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ নিজের নেই তাতে কি? মনের গহীনের সুপ্ত ইচ্ছেই যদি হয় প্রাণশক্তি, তাহলে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তাই সমাজসেবার ব্রত নিয়েই হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় সর্বদাই সজাগ এমনি এক তরুণ শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মোরাদ খান। তিনি উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া গ্রামের মো. দুলাল খানের ছেলে। তিনি শেরপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে এম বি এ করছেন। ২০১২ সাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে আসছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মে মঙ্গলবার গভীর রাতে তার (মোরাদ) গ্রামেরই মৃত জামাত আলী ফকিরের ছেলে মোতালেব হোসেনের বাড়িতে এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই অগ্নিকান্ডে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয় বলে জানা যায়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিঃস্ব এ পরিবারকে ঘর মেরামতের জন্য ৪২ হাজার টাকা নগদ প্রদান করেন তরুন সমাজকর্মী মোরাদ। এবার আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এলাকার ৫০ টি দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে ঈদ বস্ত্র হিসেবে শাড়ি, লুঙি, শিশুদের জন্য নতুন জামা-কাপড় ও সেমাই-চিনি বিতরণ করেছেন। এছাড়া গজনী পাহাড়ে দুইটি বর্ণ শিক্ষার স্কুল ও নিজ এলাকায় একটি নৈশ বিদ্যালয় চালিয়েছেন। অর্থ অভাবে এখন বন্ধ করে দিয়েছেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট নিরসনে পাহাড়ের একটি গ্রামে স্থাপন করেন একটি টিউবওয়েল। অনেক অসহায় মানুষের চিকিৎসায় রক্ত ও চিকিৎসার খরচ, গরীব ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি কিংবা বইয়ের খরচের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। এ সব করেছেন তিনি (মোরাদ) নিজে, তার ফেসবুক বন্ধু ও শেরপুরের কয়েকজন দানশীল ব্যক্তির অর্থায়নে।
উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. আনিস মিয়া জানান, তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তার দুই সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়ে ছিল। পরে হঠ্যাৎ মোরাদের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানানোর পর তার (আনিস) সন্তানদের কলেজ ও স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন। তার (আনিস) স্ত্রীকে কাপড়ের ব্যবসার জন্য নগদ ২০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দেন শেরপুরের জনৈক এক দানশীল ব্যক্তির নিকট।
এ ব্যাপারে মোরাদ খান বলেন, আমার সাধ আছে, সাধ্য নেই। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বে এখনো অনেক কিছু করতে পারছি না। অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যালয়গুলো চালু করতে অর্থের প্রয়োজন। তার কাজগুলোতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
