রেজাউল করিম বকুল, শেরপুর : রাস্তার পাশেই বাড়ি। পুরো বাড়ি সরগরম। দুর থেকে বুঝা যায় বাড়িতে একটা কিছু হচ্ছে। বাড়ির সামনে সাজানো হয়েছে গেইট। ভিতরে প্রবেশ করতে দেখা যায় সবাই যেন ব্যস্ত। তবে পুরুষের সংখ্যা একেবারেই কম। যে দু’একজন চোখে পড়েছে তা আবার বহিরাগত। চেয়ারে বসে পান চিবুচ্ছে। মেয়েদের মধ্যে কয়েকজন থালা বাসন পরিষ্কার আর রান্নার করছে। আঙ্নিা জুড়ে মেয়েরা ঘিরে আছে ছোট্র এক শিশুকে। তাদের মধ্যে কেউ তার গায়ে হলুদ মাখছে। কেউবা হাতে দিচ্ছে মেহেদী। এক আধা বয়স্ক মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, আজ মধুরানীর বিয়ে। তাই বিয়ের আয়োজন চলছে। তিনি জানান, তার বাবার নাম মজনু মিয়া। এটি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের হাসঁধরা গ্রাম। তার বিয়ে ঠিক হয়েছে পার্শ্ববর্তী মন্ডলপাড়া গ্রামের দুলা মিয়ার ছেলে রিফাত মিয়ার সঙ্গে। মধুরানী হাসঁধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। আর রিফাত দশম শ্রেণীতে। এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভায়াডাঙ্গা ব্র্যাকের পল্লী সমাজের নারী নেত্রী রোজিনা, আমেনা, সীমাসহ কয়েকজন। তারা প্রথমে তার মা বাবাকে এ বিয়ে বন্ধ করার পরামর্শ,দেন। ওই শিশুর মা বাবা তাদেরকে উত্তর দিয়েছেন, এখন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। বন্ধ হবে কিভাবে। তারা ফিরে আসেন ওই বাড়ি থেকে। তবে তাদের চেষ্টা থামেনি বলে জানান পল্লী সমাজের এ নারী নেত্রীরা।
অবশেষে এ সংবাদ পেয়ে বিয়ে বাড়িতে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবা শারমিন। তাকে দেখে শুরু হয় ছুটাছুটি। কয়েক মিনিটের মধ্যে জন্য শূন্য হয়ে পড়ে বাড়িটি। অবশেষে বাল্য বিয়ে থেকে রা পেল মধুরানী। তবে এ বিয়েতে মধুরানীরও সম্মতি ছিলনা বলে জানায় তার বান্ধবীরা। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে। ভায়াডাঙ্গা ব্র্যাকের উপজেলা সামাজিক মতায়ন কর্মসূচীর কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের হস্তেেপ এ বিয়ে বন্ধ হয়েছে। তা দেখে এলাকার মানুষ সচেতন হবে। এভাবেই দিন দিন বন্ধ হবে বাল্য বিয়ে। তার পরিবার সূত্র জানায়, তারা ভুল বুঝতে পেরেছে। মধুরানী এখন থেকে স্কুলে পড়তে যাবে।




