স্টাফ রিপোর্টার : খাদ্যউদ্বৃত্ত অঞ্চল শেরপুরে এবার চলতি বোরো আবাদে ধানের শীষ মরা রোগে মহামারী আকার ধারন করেছে। এতে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫শ/৬শ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বোরো আবাদের উৎপাদন ল্যমাত্রা অর্জনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আর দিশেহারা হয়ে পড়ছেন এলাকার কৃষকরা।

জানা যায়, সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই বোরো আবাদে ওই রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রি-ধান ২৬ ও ব্রি-ধান ২৮ জাতের ধানের তে তিগ্রস্থ হয়েছে বেশি। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় প্রায় ৫০/৬০ হেক্টর জমিতে ওই রোগের লণ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ একর জমির ধান সম্পুর্ন তিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এটি ধানের নেক ব্লাষ্ট রোগ।
পোড়াগাঁও ইউনিয়নের আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস (৫০) বলেন, তিনি ৮ একর জমিতে ব্রি-ধান ২৬ ও ২৮ জাতের লাগিয়েছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এখন প্রায় ৬ একর জমির ধানের শীষ সম্পুর্ণরূপে মরে গেছে। এতে ধান কাটা ও মাড়াই খরচও উঠবে না। কৃষক নজরুল ইসলাম (৩২), ইমান আলী (৪৫), জয়নুদ্দিন (৪৩) বলেন, ধানের শীষ মরা রোগ প্রতিরোধের জন্য এমিষ্টার টম, জেলি ও ট্রুপার নামক ছত্রাকনাশক বোরো েেত স্প্রে করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। েেতর সব ধান মরে গেছে। তারা বলেন, আয়ের আর কোন পথ না থাকায় প্রকৃতি নির্ভর ওই আবাদে আমরা বিরাট মাইর খাইছি। হাতের টাকা খরচ করে বোরো ধান লাগাইছি। কেউবা ঋণ-ধার করে আবাদ করছে। পুরো আবাদই নষ্ট হওয়ায় এখন তাদের আর কোন উপায় নেই। বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষীরা পড়েছে মহা বিপাকে।
একই অবস্থা বিরাজ করছে সীমান্তবতী ঝিনাইগাতী উপজেলায়। এ উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১২ হাজার ৪শ হেক্টর জমি। অনুকুল আবহাওয়া থাকায় এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয় ১৩ হাজার ৯শ’ ২০ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাওয়ার আশায় বুক বাধে কৃষক ও কৃষি বিভাগ। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই নেকব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে বোরো আবাদ। উপজেলার প্রায় সর্বত্রই বোরো ধানের ক্ষেতে ব্যাপক আকারে ওই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া শ্রীবরদী, নকলা ও শেরপুর সদর উপজেলার কিছু কিছু এলাকাতেও ওই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুস সালাম বলেন, এবছর বোরো আবাদের শেষের দিকে বেশি বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় ওই ব্লাষ্ট বা শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে। ঠিক মাত্রায় ঔষধ ¯েপ্র করলে ধানের তি হওয়ার কথা নয়। এরপরও বেশি মাত্রায় ক্ষতি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের লোকজন ছুটির দিনও কাজ করছে। এলাকায় গিয়ে ক্যাম্পেইন করে বাড়ানো হচ্ছে কৃষকদের সচেতনতা।
