হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) : আলীকদম ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় শিক্ষক সংকটে পাঁচ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর জীবন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। গণিত ও কৃষি শিক্ষার শিক্ষক ছাড়াও সুপারের পদ শুন্য দির্ঘদিন ধরে এমনটাই জানাচ্ছেন অভিভাবকরা।
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় সরকারী অনুদানভুক্ত একমাত্র দাখিল মাদরাসায় সুপার এবং গণিত ও কৃষি শিক্ষার শিক নিয়োগ নেই দীর্ঘদিন ধরে। সুপারের পদ শূন্য হয়েছে গত আড়াই বছর আগে। নিয়মিত কমিটির মেয়াদও এক বছর পূর্বে শেষ হয়েছে। শিকের অভাবে শিার্থীরা রয়েছে বিপাকে। ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা নিয়ে অভিভাবকরা পড়েছেন শংকায়। শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিঘিœত হচ্ছে মাদরাসার পাঠদানসহ সার্বিক কার্যক্রম।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩১অক্টোবরের মাদরাসা পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অধ্যবদি কমিটি গঠনের কোন উদ্যেগ নেয়া হয় নাই। মেয়াদোত্তীর্ণ একমিটি শিক্ষকদের বেতন ভাতাসহ প্রশাসনিক সমস্ত কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।
২০১২ সালের ৩১ জুন মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মুহাম্মদ আলী অবসর নেন। এর পর ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসানে দায়িত্ব নেন মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ হোসাইন। তার দায়িত্ব নেয়ার আড়াই বছর পার হতে মাদ্রাসার একাডেমিক শৃঙ্খলা মুখ থুবড়ে পড়েছে। যার কারণে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানে যথারীতি অনিয়মের আশ্রয় নিচ্ছে।
এদিকে মোঃ হোসেন সুপার এর দায়িত্ব নেয়ার পর বিগত কমিটির মেয়াদে কয়েকবার সুপার নিয়োগ দেওয়ার কথা শুনা গেলেও বিভিন্ন অজুহতে তা পন্ডু করে দিয়েছে এমনটাই জানালেন কয়েকজন অভিভাবকরা। জানতে চাইলে মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক মোঃ ওসমান গনি, মৌলভী আব্দুস্শুক্কুর এবং হাফেজ আবুল হাসেম জানান, কান্ডারী বিহীন একটি তরী কোন দিকে যাবে সেটা কেইউ বলতে পারেনা। মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার অদক্ষ বা অযোগ্য হলে মাদরাসা পরিচালনা করা কখনোই সম্ভব নয়। এসব বিষয়ে কথা বলতে গেলে সুপার এর ইন্দনে সুপার এর পক্ষবলম্ভনকারী একমাত্র শিক্ষক মাওঃ আবুজর গেফারী অভিভাবকদের যথারিতী হুমকি প্রদর্শন করে আসছে। তারা আরো বলেন, বিগত আড়াই বছর যেভাবে অতিবাহিত হয়েছে এভাবে চলতে থাকলে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন হুমকির মূখে পড়বে। এবিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দ্রুত ও সুদৃড় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীর সাথে কথা বললে তারা জানান, ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে গণিত শিক্ষক মোঃ জলিল চাকুরী হইতে ইস্তফা দিয়ে চলে যাওয়ার পর থেকে মাদরাসায় গণিত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় নাই। গণিত শিক্ষক না থাকায় ২০১৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা গণিত এর পরীক্ষা বর্জন করে। পরবর্তীতে ০৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ইং তারিখ একই প্রশ্ন নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনুরোধ করে নামে মাত্র পরীক্ষা নেন। একই সাথে কৃষি শিক্ষার শিক্ষক নেই মাদরাসার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ হোসেন বলেন, আমরা এপর্যন্ত পাঁচ বছর সুপার পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী দিয়েছি। কিন্তু পাঁচ বারে মাত্র পাঁচটি আবেদন এসেছে। যার কারণে এপর্যন্ত কোন নিয়োগ প্রকৃয়া সম্পর্ন করা হয় নাই। তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীরা গণিত পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষক না থাকার কারণে নয়। বরং মাদরাসার অন্য কোন শিক্ষকের ইন্দনে ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা বর্জন করেছে। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এডহক কমিটি’ গঠনে নীতিমালা অনুসরণ করে আমরা কমিটি গঠনের প্রকৃয়া চালিয়ে যাচ্ছি। খুব শীগ্রই একটি এডহক কমিটি গঠন করা হবে।
