মো: শাহ্ জামাল, জামালপুর : জামালপুরের মেলান্দহে বৃক্ষরাজির উপর চলছে সীমাহীন নির্মমতা। অবাধে রাস্তার পাশে থাকা সরকারি গাছ কেটে সাবাড় করছে দুর্বৃত্তরা। এতে দেশের ভারসাম্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এমনকি বেহাত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সম্পদও। উপজেলার মেলান্দহ বাজার হ’তে মাহমুদপুর গামী রাস্তার দু’পাশের গাছগুলো এমন করুণ নিমর্মতায় শিকার।

সরেজমিন ঘুরে দেখাগেছে, গাছনিধনে বৃক্ষখেকোরা বেছে নিয়েছে নতুন কৌশল। দুর্বৃত্তেরদল প্রথমে জীবন্ত বৃক্ষগুলোর গুড়া থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশের চামড়া (ছাল) তুলে নেয়। ফলে চামড়াহীন বৃক্ষদের মাটি থেকে খাদ্য সরবরাহে চরম ব্যাঘাত ঘটে। এমনকি মাটি থেকে গাছের শিকড় বেয়ে শাখা-প্রশাখা-পাতায় খাদ্য-পানীয় সরবরাহ বন্ধ হয়। এসব বৃক্ষরাজির বাকশক্তি না থাকায় প্রতিবাদহীন হয়ে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকে। এমন প্রতিকূলতায় গাছ বেঁচে থাকার সংগ্রামের কিছুদিন পর এক সময় মরে যায়। এরপর দুর্বৃত্তরা এক সময় বৃক্ষের শাখা-প্রশাখা কেটে নেয়। অবশেষে সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে বৃক্ষটিও কেটে নিয়ে যায়।
পৌরসভার কাজিরপাড়া, পাচুরপাড়া, নাংলা ইউনিয়নের সীমানায় বয়রাডাঙ্গা, গোবিন্দপুর, মাঝবন্দ নাংলা, চারাইলদার এবং মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগপয়লা-পাচপয়লা হয়ে বাজার পর্যন্ত সমুদয় রাস্তার পাশের বৃরাজির উপর চলছে এমন তান্ডব । এ ব্যাপারে এলাকার পৌরকাউন্সিলর মিজানুর রহমান মুকুল জানান-শত চেষ্টায়ও বৃক্ষখেকোদের দমন করা যাচ্ছে না। নাংলা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ কিসমত পাশার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান-দুস্কৃতিকারীরা নতুন কৌশলে রাস্তার গাছ উজাড় করে চলেছে। প্রতিটি গাছের মূল্য ৪০-৫০হাজার টাকা কিংবা তারও উপরে। তৎকালীন এরশাদের আমলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বজলুর রহমান ভূইয়া (পরবর্তীতে প্রতিরা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব)’র তত্বাবধানে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির আওতায় গাছগুলো রোপন করা হয়েছিল। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ একেএম হাবিবুর রহমান চাঁন জানান-বৃনিধনের এ নতুন কৌশলটি আমার নজরে পড়েছে। রাস্তার পাশে জমির মালিকরাই এ কাজের সাথে জড়িত। শুনেছি রাস্তার পাশের গাছের ছাল (চামড়া) তোলার পর দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত করতে গাছের গোড়ায় লবন ছিটানো হয়। এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নে তিনি নির্বাক থাকেন।
উল্লেখ্য, গ্রাম পর্যায়েও রাস্তা-ঘাট-সরকারি স্থাপনায় রোপিত গাছগুলো কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তেরা। যখন যে সরকার মতায় আসছে; সেই সরকারের পাওয়ার পার্টির নেতা-পাতিনেতা এমনকি, এমপি’র দোহাই দিয়েও গাছ হজম করার ঘটনা নিত্যদিনের। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে বিধি-নিষেধ আরোপকারীদেরও নাজেহাল, তীক্ততার অভিজ্ঞতা বাতাসে ওড়ছে। দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বৃ রায় প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন- পরিবেশ সংগঠন বিহঙ্গ’র সভাপতি-মানবাধিকার কর্মী প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম। এতে রা পাবে পরিবেশের ভারসাম্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদও।
