ইমরোজ খোন্দকার বাপ্পি, পাবনা : পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটে সাধারন শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমূখী সংঘর্ষের ঘটনায় পাবনা সদর থানায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ ৫৬ জন শিক্ষার্থীসহ ১০০ জনকে আটক করেছে। ১১ জানুয়ারী রবিবার দুপুরে ইনিষ্টিটিউটের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম খান ভাংচুর ও হামলার দায়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০ জনের নামে এবং হামলা ও মারপিটের ঘটনায় পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামী করে মামলা দুটি দায়ের করেছে। এদিকে রবিবার দুপুরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে শনিবারের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গেলে পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাইদ হোসেন ও রেজিষ্টার নবির উদ্দিন উপর হামলা করেছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এ সময় হাসপাতালে আতংক ছড়িয়ে পরে। শনিবারের ঘটনায় ইনিষ্টিটিউট কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসানুল হক জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটে সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমূখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে। পুলিশ ৫৬ জন শিক্ষার্থীসহ ১০০ জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের যাচাই-বাছাই চলছে। জড়িতদের গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করা হবে। পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট ক্যাম্পাস বর্তমানে শান্ত রয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম জানান, শনিবারের ঘটনায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও হোষ্টেল সুপার সাইদ হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম খান ভাংচুর ও হামলার দায়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০ জনের নামে পাবনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ইনিষ্টিটিউটে বর্তমানে স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে। যথারীতি আজ রবিবারে ২য়, ৪র্থ ও ৬ষ্ঠ পর্বের বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরো জানান, রবিবার দুপুরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে শনিবারের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গেলে পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাইদ হোসেন ও রেজিষ্টার নবির উদ্দিন উপর হামলা করেছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান।
পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুমন বলেন, পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন বাদী হয়ে শনিবারের হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা তুফানের ছেলে অন্তু ও ভাতিজা পিয়াসসহ শাকিব, আবির, আতোয়ার, জায়েদুলসহ কতিপয় বখাটেদের মোবাইল ছিনতাই, চাঁদাবাজীসহ নানা প্রকার নির্যাতনে অতিষ্ঠ পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এরই এক পর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহমেদ শরিফ ডাবলু ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুমনসহ একটি প্রতিনিধি দল পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটের অধ্যক্ষ’র কক্ষে সমঝোতা বৈঠকে বসে। এ সময় অতর্কিত ভাবে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা স্বশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারপিট করে। এতে গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও কিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
