ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী প্রতিনিধি: মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত পুলিশের চিরুনি অভিযানে ১১ শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি। পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও আহত করার অভিযোগে মহানগরীর শাহ মখদুম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্ত করার জন্য থানার অপর উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম রেজাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মহানগরীর শাহ মখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সায়েদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, পুলিশের অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে কিছু কিছু শনাক্ত করা গেছে। তবে মামলার তদন্ত স্বার্থে এখনই তাদের নাম-পরিচয় জানানো যাবে না। আটক ১১ জনকে বর্তমানে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শিগরিই মূল হামলাকারীদের আটক করা সম্ভব হবে।পুলিশের হাতে আটক ১১ জন হচ্ছে শিবিরকর্মী মাসুদ রানা, মোস্তাফিজুর রহমান, রবিউল ইসলাম, নাইয়ার, জনি, রমজান, ফয়সাল, সুজন, আতিক, সোহেল রানা ও শাহীনুর ইসলাম। থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হবে। এরপর দুপুরের মধ্যে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।রাজশাহীতে পুলিশ পেটানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোট ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৬০ থেকে ৭০ জন শিবির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র বোয়ালিয়া জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার(এসি) ইফতে খায়ের আলম বুধবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রাজশাহীতে পুলিশ পেটানো শিবিরকর্মীদের ধরতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে চিরুনি অভিযান শুরু হয়। রাতভর মহানগরজুড়ে বিশেষ এ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। শর্টগান কেড়ে নিয়ে সেই অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে পুলিশ সদস্যদের আহত করার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নত করার চেষ্টা চলছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সোয়া ১০টার দিকে অবরোধের সমর্থনে ছাত্রশিবিরকর্মীরা আলিফ লাল মিম ভাটার সামনের মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং রাস্তায় পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। শিবিরকর্মীরা পেট্রোল ছুঁড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে।
এ সময় পুলিশের পিকআপ ভ্যানটি সেখানে সরে গেলে শিবিরকর্মীরা পুলিশের গাড়িটি ভাঙচুর শুরু করে। গাড়ি থেকে পুলিশ কনস্টেবল আমজাদ ও শফিকুল নামার সাথে সাথেই শিবিরকর্মীরা তাদের ঘিরে ধরে ইট ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় শিবিরকর্মীরা পুলিশের অস্ত্রও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে খবর পেয়ে বিজিবি ঘটনাস্থলে গেলে শিবির কর্মীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপত্র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, আহত পুলিশ সদস্যরা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত এবং সুস্থ। তাদের চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এর আগে রাজশাহীতে পুলিশের ওপর হামলা চালায় ছাত্রশিবির কর্মীরা। মঙ্গলবার সকাল সোয়া দশটার দিকে মহানগরীর শালবাগান এলাকার পাশে আলিফ লাম মিম ভাটার সামনে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত শাহ মখদুম থানার পুলিশ কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৬) কং নম্বর ১৪১৬ ও আমজাদ (৩২) কং নম্বর ১৫৬০।
আহত অপর দুইজন হলেন শাহ মখদুম থানা পুলিশের উপপরিদর্শক(এসআই) জাহাঙ্গির (৩৫) ও কনস্টেবল জামাল (৩৪) কং নম্বর ১৫৮৯। তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তারা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত।
