শ্যামলবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর শাহজাহানপুর খেলার মাঠের পাশে ৩শ’ ফুট গভীর একটি পানির পাইপে আটকা পড়েছে প্রায় ৪ বছর বয়সী এক শিশু। শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ ব্যাপক তত্পরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট দলসহ বুয়েটের একদল বিশেষজ্ঞ।

ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ২৬ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রেলওয়ের ৩শ’ ফুট দীর্ঘ ও এক ফুট প্রস্থের একটি পানির পাইপের ভেতরে পড়ে যায় শিশুটি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। শিশুটির নাম জিহাদ। তার বয়স চার বছর। সে মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের নৈশ প্রহরী মো. নাছিরের ছেলে। তারা রেলওয়ে কলোনিতে থাকে। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে জিয়াদ ওই গর্তে পড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের (ঢাকা অঞ্চল) সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, শিশুটি খেলতে খেলতে পানির পাইপে পড়ে যায়। শিশুটি এখনো বেঁচে আছে। ভেতর থেকে শিশুটির কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। অন্ধকারে যাতে ভয় না পায়, সেজন্য পাইপের ভেতর রশি ফেলে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাকে খাবার ও অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। ডাকলে সে সাড়া দিচ্ছে। পাম্পের ভেতরে একটি মাইক্রোফোন দেয়া হয়েছে। শিশুটি বেঁচে থাকলে মাইক্রোফোনের মাধ্যমে তার কান্নার আওয়াজ শোনা যাবে।
প্রথমে শিশুটিকে রশি ফেলে উদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল। শিশুটি ৪ বার রশিটি ধরে আবার ছেড়ে দিয়েছে। বেশ দুর্বল হয়ে পড়ায় তাকে টেনে তোলা যাচ্ছে না। তারপর রশিতে কাঠ বেঁধে দেয়া হয়। সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় রশির সঙ্গে পাইপে একটি বস্তা দেয়া হয়। পরে ক্রেন দিয়ে পাইপটি টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়।
বিভিন্ন কায়দায় দড়ি ফেলেও ১৪ ইঞ্চি ব্যাসের ওই পাইপ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব না হওয়ায় ভেতরে থাকা তিন ইঞ্চি ব্যাসের সাড়ে তিনশ ফুট দীর্ঘ একটি পাইপ ক্রেইন দিয়ে টেনে তুলে জায়গা করা হয়েছে। ওই পথে তুলনামূলভাবে সরু নতুন একটি পাইপ ঢুকিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারের একটি বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছেন বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল।
তাদের সঙ্গে কথা বলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা বুয়েটের প্রস্তাবিত পদ্ধতিতেই চেষ্টা চালাতে চান। ইতোমধ্যে পাইপ কেটে ওই ‘ক্যাচার’ বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষর্থী তানভীর আরাফাত ধ্রুব জানান, তাদের ওই পাইপের নিচের অংশে এমন ব্যবস্থা থাকবে যাতে সেটি নিচে পৌঁছে গুটিয়ে রাখা একটি অংশ খুলে দেবে শিশুটিকেসহ তা উপরে উঠিয়ে আনার ব্যবস্থা থাকবে। শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য সেখানে ক্যামেরা ও আলোসহ বশির আহমেদ নামের এক স্বেচ্ছাসেবীকে নামানোর কথা ভাবা হলেও পরে নিরাপত্তার খাতিরে তা বাতিল করা হয়।
রেলের প্রকৌশলী বরখাস্ত

রাজধানীর শাহজাহানপুরে গভীর নলকূপের পাইপের মুখ খোলা অবস্থায় রাখার অভিযোগে রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি ওই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। এছাড়া প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস আর হাউসকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
