শ্যামলবাংলা ডেস্ক : উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পাইপে সন্ধান পাওয়া গেলো শিশু জিহাদের। একজন সাধারণ নাগরিক সুতার তৈরি নেট ফেলে শিশুটিকে নিচ থেকে তুলে নিয়ে আসেন। একটি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে জিহাদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পরই বিকাল ৩ টায় ওই নেটের মাধ্যমে শিশুটির দেহ উপরে তোলা হয়। উদ্ধারের পরপরই শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটি মারা গেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের ৩শ ফুট গভীর পাইপে পড়ে যায় চার বছরের শিশু জিহাদ। প্রথমে শিশুটিকে রশি ফেলে উদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল। তারপর রশিতে কাঠ বেঁধে দেয়া হয়। সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় রশির সঙ্গে পাইপে একটি বস্তা দেয়া হয়। সর্বশেষ ক্রেন দিয়ে পাইপটি টেনে তোলার চেষ্টা করা হলেও সেটি সফল হয়নি। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে ৩শ’ ফুট গভীর পাইপে শিশু জিহাদের অবস্থান জানতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা পাঠানো হয়। উদ্ধার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা বলেন, ক্যামেরা নামানোর পর একেবারে শেষ প্রান্তে তেলাপোকা, টিকিটিকিও দেখা গেছে। কিন্তু শিশুর কোনো শরীর দেখা যায়নি। শনিবার দুপুর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকে। দফায় দফায় চলা অভিযানেও শিশুটির খোঁজ না পাওয়া উদ্ধার কাজ স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস। এদিকে এর আগে উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণার পর শিশুটিতে উদ্ধারে উপস্থিত হাজারও মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তারা সরকার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেন।
পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মহা-পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান ঘটনাস্থলে সংবাদ সম্মেলন করে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা দেন। ওইসময় তিনি বলেন, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছি। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। একপর্যায় আমরা শক্ত একটি স্তরে পৌঁছে গেছি। ওই শক্ত লেয়ারটি ভাঙ্গার চেষ্টা করেছি। আমরা মনে করছি পাইপের মধ্যে শিশু জিহাদ নেই। তাই উদ্ধার অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হল।
