দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ১ লাখ মে:টন কয়লা বিক্রির বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আবেদন পড়েছে ২০ হাজার।কয়লা কেনার জন্য আবেদনের শেষ দিন রোববার সারা দেশ থেকে ইটভাটা মালিক ও বয়লার চালিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা এই আবেদন করেন। এর সঙ্গে অনেক কয়লা ব্যাবসায়ীরাও আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন খনি কর্তৃপক্ষ।তবে মাত্র ১ লাখ মে:টন কয়লার বিপরীতে ২০ হাজারের অধিক আবেদন জমা হওয়ায় খনি কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে কয়লা রপ্তানি করতে ভারত কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ রফতানিকারকদের শর্ত আরোপ করেছে। এনিয়ে সেদেশের কাষ্টমস ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মাঝে সৃষ্ট শর্ত জটিলতার কারনে শনিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে সোমবার দুপুর থেকে আবারও আমদানি শুরু হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া খনি সূত্রে জানা গেছে, চলতি সনের ১০ মে ভূগর্ভে হঠাৎ পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১২০৫ নং কোল ফেইজ থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ১২১২ নং কোল ফেইজ তৈরি করে চলতি সনের ১৮ অক্টোবর থেকে পুনরায় কয়লা উত্তোলন শুরু করে খনি কর্তৃপক্ষ। এতে করে দীর্ঘ পাঁচ মাস দেশের একমাত্র উৎপাদন শীল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা উৎপাদন বন্ধ থাকায় কয়লার সংকট দেখা দেয়। একই সঙ্গে পরিবেশবিদদের চাপের মুখে কয়লা পাশ্ববর্তী দেশে ভারতে কয়লা রপ্তানী বন্ধ করে দেয়। ফলে ভারত থেকে কয়লা আমদানী করতে না পারায় বিপাকে পড়েন কয়লা আমদানী ব্যবসায়ীরা। এতে কয়লার জন্য হাহাকার দেখা দেয় দেশের ইটভাটা ও বয়লার চালিত শিল্প প্র্রতিষ্ঠানে।
এছাড়া দীর্ঘ সময় পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা বিক্রির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে কয়লা কেনার জন্য ইটভাটা ও বয়লার চালিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা ভিড় জমায় বড়পুকুরিয়া খনিতে।
এদিকে বাংলাদেশে কয়লা রপ্তানি করতে ভারত কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ রফতানিকারকদের শর্ত আরোপ করেছে। এনিয়ে সেদেশের কাষ্টমস ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মাঝে সৃষ্ট শর্ত জটিলতার কারনে শনিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে সোমবার দুপুর থেকে আবারও আমদানি শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় ওপার সীমান্তের পাইপ লাইনে আটকা পড়ে যায় প্রাায় দু’শতাধিক কয়লা বোঝাই ট্রাক।

নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার মেঃ টন কয়লা আমদানি হলেও গেলো সাতদিনে এ বন্দর দিয়ে ১০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা আমদানি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা ও আমিনার রহমান জানান, এতদিন ভারত কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের শর্ত ছাড়াই কয়লা আমদানি হয়ে আসছিল। যখনি বাংলাদেশে কয়লার চাহিদা বেড়েছে ঠিক তখনি নতুন শর্ত আরোপ করলো সেদেশের কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে করে বিপাকে পড়তে হলো এ দেশের আমদানিকারক প্রতিষ্টান ও ইট ভাটা মালিকদেক। ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিদিন ট্রাক প্রতি গচ্চা দিতে হলো ১ হাজার ভারতীয় রুপি ডিটেনশন চার্জ।
হিলি চেকপোষ্ট জিরো পয়েন্টে ভারত হিলি এক্সপোর্টার এন্ড রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক অশোক মন্ডল জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে কয়লা রপ্তানি করতে হলে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষকে জিম্মানামা দিতে হবে। কারন ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সেদেশের সরকার কোন কারনে শুল্ক নির্ধারন করলে তাদেরকে তা পূরন করে দিতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন যেহেতু কয়লা শুল্ক মুক্তভাবে এ যাবত পর্যন্ত কোন বাধা ছাড়াই। কাষ্টমস তাদেরকে এই বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। আর এগুলো সুরাহা করতে রপ্তানি কাজ করতে দু’দিন দেরি হলো।
হিলি কাষ্টমস সহকারী কমিশনার মহিববুর রহমান ভূঞা জানান, সরকার ইতিমধ্যে কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই সেদেশ থেকে কয়লা আমদানি বন্ধের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি জানান, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার মেঃ টন কয়লা আমদানি হয়েছে। এরমধ্যে গত ৭ দিনেই আমদানি হয়েছে ১০ হাজার মেঃ টন।
