দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরে আলু বোঝাই ট্রাক উল্টে ফারুক হোসেন (৩৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৬ শ্রমিক। ঘটনাটি ঘটেছে ২১ ডিসেম্বর রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় বীরগঞ্চ উপজেলার নিজপাড়া ইউপির হাড়িপাড়া এলাকায়। নিহত ফারুক উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের তসির উদ্দিনের ছেলে বলে জানা গেছে।

বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম শওকত হোসেন জানান, উপজেলার কাচারীপাড়া এলাকা থেকে আলু বোঝাই একটি ট্রাক ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথে হাড়িপাড়ায় ট্রাকটি উল্টে গিয়ে ৭ শ্রমিক আহত হন।আহতদের উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (দিমেক) নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুকের মৃত্যু হয়।
২২২ কোটি টাকার লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে
সেতাবগঞ্জ চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু

২২২ কোটি টাকার লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করেছে দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল। রিফাইন সুগারের বাজারে দেশীয় চিনির চাহিদা কম হওয়ায় দিনাজপুর সেতাবগঞ্জ চিনিকলে ৭ হাজার ৪৯৩ মে.টন চিনি অবিক্রিত রয়েছে। চিনি বিক্রি না হলে স্থান সংকুলানের সমস্যায় পড়বে এমনটাই শংকা করছেন চিনিকল কর্তৃপক্ষ।
১৯৩৩ সালে দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে এটি যান্ত্রিক ত্রুটি এবং লোকসানের কারনে ১৯৭৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। পরে এটিকে আধুনিকিকায়ন করে ১৯৮৩ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মিলটিকে পুনরায় চালু করা হয়। বিগত ৩১ বছরের মধ্যে শুধুমাত্র ১৯৮৯-১৯৯০ এবং ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে লাভের মুখ দেখতে পায় মিলটি। বাকী বছরগুলোকে লোকসান গুনতে গুনতে লোকসানের পরিমান দাড়িয়েছে প্রায় ২শ’ ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত অর্থ বছরেই প্রায় ৩৯ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত রয়েছে।
সরকার দেশীয় চিনিকলগুলোর চিনির মূল্য নির্ধারন করেছে ৫০ টাকা কেজি। যেখানে বিদেশ থেকে নিয়ে আসা র’ সুগার রিফাইন করে বিক্রি করা হচ্ছে ৩৯ টাকা কেজি দরে। এতে করে ডিলাররা এই মিল থেকে চিনি উত্তোলন করছেন না। ৮ হাজার মে.টন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন সেতাবগঞ্জ চিনিকলে বর্তমানে ২০১১-১২, ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ মৌসুমে মোট মজুদ রয়েছে ৭ হাজার ৪৯৩ মে.টন চিনি। এই ৩টি মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল মোট ১২ হাজার ৯৮০ মে.টন চিনি। যার মধ্যে মাত্র ৫ হাজার ৪৮৭ মে.টন চিনি বিক্রি হয়েছে।
এরই মধ্যে এই চিনিকলে নতুন করে আখমাড়াই মৌসুম শুরু হয়েছে শুক্রবার। এবারের টার্গেট ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ মে.টন চিনি। কিন্তু গোডাউনে মজুদ থাকা চিনি বিক্রয় না হলে এবারের চিনি রাখতে সমস্যায় পড়বেন চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এদিকে চিনি বিক্রি না হওয়ায় সময়মতো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না শ্রমিক-কর্মচারীরা।সেতাবগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হাবিবুর রহমান দুলাল জানান, চিনি বিক্রি না হওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি যারা অবসরপ্রাপ্ত হয়েছেন তারাও অবসরভাতা পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
চিনিকলের ষ্টোরে দায়িত্বরত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মিজানুর রহমান জানান, গত ৩টি মৌসুমের মোট ৭ হাজার ৪৯৩ মে.টন চিনি মজুদ রয়েছে। এসব চিনি বিক্রি না হলে আগামী মৌসুমের উৎপাদিত চিনি সংরক্ষণের সংকট দেখা দিতে পারে বলে জানান তিনি।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: শহীদ উল্লাহ জানান, চলতি মাড়াই কার্যক্রমে সাড়ে ৭ রিকোভারীতে ৪ হাজার ৫০০ মে.টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। সময়মতো পাওনা বুঝিয়ে দিতে পারলে রোপন কার্যক্রমে গত বছরের চেয়ে বেশি আখ রোপন হবে বলে তার আশাবাদ। রিফাইনারীরা কম মূল্যে চিনি বিক্রয় করায় দেশী চিনি বিক্রি হচ্ছেনা। সরকারের নেক দৃষ্টি দেওয়া হলে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
