চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : চকরিয়ায় চিকিৎসার নামে জনগণের সাথে প্রতারণার অভিযোগে উপজেলা ভ্রাম্যমান আদালত দুই ভুয়া চিকিৎসককে ১৫দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন। রবিবার বিকেলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমদ হোসেন ভুঁইয়া বরইতলী ইউনিয়নের একতা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করেন। তাঁরা হলেন, রনধীর বড়–য়া (৩৫) ও নিপুন চাকমা (৩৪)। রনধীর বড়–য়া কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মরিচ্যা গ্রামের ও নিপুন চাকমা রাঙ্গামাটি জেলার বাসিন্দা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমদ হোসেন ভুঁইয়া জানান, ভুয়া চিকিৎসক রণধীর ও নিপুন কোন ধরণের অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বরইতলী একতাবাজার এলাকায় চেম্বার খুলে স্থানীয় লোকজনের মাঝে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। গতকাল অভিযান চালিয়ে তাদেরকে চেম্বার থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট আইনে দুইজনকেই ১৫দিন করে বিনাশ্রম করাদ- দেওয়া হয়।

চকরিয়ায় পুলিশ পরিচয়ে তান্ডব, আহত ৫
চকরিয়ায় পুলিশ পরিচয়ে বসতবাড়িতে ঢুকে মুখোশধারী অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। ওইসময় তাঁরা একটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে বাড়ির কিছু অংশ ভেঙ্গে দিয়েছে। অপর একটি বসতবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। এসময় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বিপুল পরিমাণ ধান, পালিত গরু লুট ও আগুনে আসবাবপত্রসহ মালামাল পুড়ে অন্তত চার লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। দুর্বৃত্তদের গুলিতে পরিবারের দুই কিশোরী গুলিবিদ্ধসহ ৫জন আহত হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ একনব্বই একর পাড়া গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা।
অভিযোগে ইউনিয়নের চরনদ্বীপ একানব্বই একর পাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গৃহকর্তা আবদুস ছালাম (৫৮) জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১টার দিকে সওদাগরঘোনা এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে জাহাংগীর আলম ও তার সহযোগি কফিল উদ্দিন, সোহেল, ইউছুপ, গিয়াস উদ্দিন, বদাইয়া, আবদুল হাফেজ, আবদুল গনী ও ছৈয়দ হোসেনের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী ২৫-৩০জনের দুর্বৃত্ত দল বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাটি করেন। ঘটনার সময় তাঁরা পুলিশের পোশাক পরিহিত ছিল। রাত আনুমানিক ১টার দিকে বাড়িতে এসে তাঁরা প্রথমে পুলিশ পরিচয় দেন। দরজা খুলতেই ভেতরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা ব্যাপক লুটপাট চালায় তার বাড়িতে। তিনি আরো জানান, ওইসময় দুর্বৃত্তরা ৮-১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁেড় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন। এ কারনে এলাকার লোকজন তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে পারেনি। বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে তার ছেলে শহিদুল ইসলামকে (২২) তুলে নিয়ে মারধরের পর দুর্বৃত্তরা কিছুদুরে অপেক্ষামান পুলিশের হাতে তুলে দেন। শনিবার সকালে পুলিশ একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
গৃহকর্তা আবদুস ছালাম আরো জানান, এর কিছুক্ষন পর দুর্বৃত্তরা বাড়ির পেছনে বিলের ওপারে গিয়ে তার ছেলে আতা উল্লাহর টিনের তৈরী বসতবাড়িটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। ঘটনার সময় তাদের গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তার স্কুল পড়–য়া মেয়ে ফাতেমা খাতুন (১৪), মোতাহেরা বেগম (১১) ও মারধরে আহত হয়েছেন স্ত্রী আরেফা বেগম (৪৮)। তার দুই বাড়ি থেকে ওইসময় দুর্বৃত্তরা নগদ ৭০ হাজার টাকা, ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল সেট ও কয়েকটি বিদেশী টর্স লাইট লুটে নেয়। এতে দুই পরিবারের প্রায় ৪লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী।
অভিযোগে গৃহকর্তা আবদুল ছালাম জানান, ঘটনার পরদিন ভোরে বাড়ির পাশ্ববর্তী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের চিংড়িঘেরের কর্মচারী তার ছোট ছেলে ওবাইদুল হাকিমকে (১৮) অপহরণ করে নিয়ে যায় একই দুর্বৃত্তরা। ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সুয়াজনিয়ার পাহাড়ে নিয়ে তাকে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা। পরে চিরিঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের হস্তক্ষেপে শনিবার বিকেলে সেখান থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওবাইদুল হাকিমকে। ওইদিন রাতে তাকে চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উপজেলার চিরিঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, দুটি বসতবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি খুবই অমানবিক। সভ্য সমাজে এমন জঘন্য কাজ কেউ করতে পারেনা। তাদের গুলিতে দুই কিশোরীসহ কয়েকজন আহত হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধরের সাথে গতকাল রাতে অনেকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি মুঠোফোন রিসিভ না করার কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চকরিয়ায় ঐতিহাসিক ঘোড়ার দৌড় মেলা ২০ ডিসেম্বর থেকে
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে অবশেষে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে চকরিয়ার শতবছরের ঐতিহাসিক ঘোড়ার দৌড় মেলা। উপজেলার কাকারা ইউনিয়নে শাহ ওমর (রা:) মাজার লাগোয়া মাঠে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে দশদিন ব্যাপী বসছে এ মেলা। গত ৯ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পক্ষে সহকারি কমিশনার মো.আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত লিখিত আদেশ মুলে দশদিন ব্যাপী এ মেলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মেলার আয়োজক জাতীয় কুস্তিগীর জাফর আহমদ জানান, চকরিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে অতীতের ধারাবাহিকতায় শতবছরের ঐতিহাসিক ঘৌড়ার দৌড় মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এবারের মেলাটি ১০৩তম আসর। মেলায় শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সের মানুষের চিত্র বিনোদনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেলা জুড়ে বসবে বাঙ্গালী সংস্কৃতির সকল স্থাপনা।
মেলার একাধিক কর্মকর্তা জানান, শতবছরের এ মেলা বন্ধ করতে স্থানীয় কিছু কতিপয় ব্যক্তি প্রশাসনের কাছে নানা অভিযোগ তুলে পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তাদের এ অপকর্মের কারনে জেলার কয়েক লাখ মেলা পুজারী দর্শক চিত্র বিনোদন থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে আয়োজক কমিটি জেলা প্রশাসন ও আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
