শাহ্ আলম শাহী,দিনাজপুর : দিনাজপুরে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস। দিবসিিট উপলক্ষে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন, প্রেসক্লাব,সাংবাদিক ইউনিয়ন, আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসুচী পালন করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে দিলো দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভ ও শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ এবং চেহেলগাজী শহীদ মুক্তিযোদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের স্মরণে দোয়া খায়ের, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা।
সকালে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্মৃতি স্তম্ভ¢ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভ শ্রদ্ধঞ্জলি অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক আহমদ শামীম আল রাজী ও পুলিশ সুপার রুহুল আমীনসহ পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দিনাজপুর প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে চেহেলগাজী শহীদ মুক্তিযোদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্তঘোষ, সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল, সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল হুদা হেলালসহ অন্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্মৃতি স্তম্ভ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধঞ্জলি অর্পণ করেন শহর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় দিনাজপুর শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম খালেকুজ্জামান রাজু’র নেতৃত্বে শহর আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডঃ রুবেল, এ্যাডঃ লিটন, এ্যাডঃ সলিমুল্লাহ সেলিম, আশরাফ আলী শাহ, আশিস দত্ত ব্যানার্জী বাপ্পি, হাসিনা আক্তার শিউলিসহ শহর আওয়ামীগ ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্মৃতি স্তম্ভ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধঞ্জলি অর্পণ করেন দিনাজপুর শহরের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় শহর আওয়ামীলগের সহ-সভাপতি আশিস কুমার ব্যানার্জী বাপ্পি, আওয়ামলীগ নেতা সুলতান সেফা উদ্দিন সাফু, এ্যাডঃ সলিমুল্লাহ সেলিম, রাশেদ শুকু, প্রশান্ত কুমার বিষু, সহ ওয়ার্ড আওয়ামীলগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শহর মহিলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়াারম্যান হাসমিন লুনা, দিনাজপুর শহর মহিলা আওয়ামীলীগের আহবায়িকা খ্রীষ্টিনা লাভলী দাস, শহর মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী আইরিন লতিফ, ইলরা আহমেদ ইতি, সম্পা সাহা মৌ, গৌরী, মরিয়ম, আনসারা বেগম বিউটি, রাশিদা বেগম, রুনা লায়লা, কাকলী, বুসরা, রীতাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্মৃতি স্তম্ভ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধঞ্জলি অর্পণ করেন জেলা যুব মহিলালীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় জেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি ছবি সিনহা, সহ-সভাপতি আন্না অধিকারী, গৌরী সেন, সাধারণ সম্পাদক মাসুদা বেগম মুক্তা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বন্নি, সুলতানা, সাংগঠনিক সম্পাদক তাজমুন নাহার ছন্দা, আইন বিষয়ক সম্পাদক মেহেজাবিন শাপলা, প্রচার সম্পাদক রাণী পারভীনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্মৃতি স্তম্ভ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধঞ্জলি অর্পণ করেন জাতীয় শ্রমিকলীগ দিনাজপুর জেলা শখার নেতৃবৃন্দ। এসময় জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আমজাদ আলী, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, জাতীয় শ্রমিকলীগ দিনাজপুর সদর উপজেলা শাখার সভাপতি আইয়াজ নবী জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন মুন্না, জেলা শ্রমিকলীগের দপ্তর সম্পাদক মঞ্জুরুল হাসান সানু, কর্যকরি সদস্য মোঃ ইউসু আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্মৃতি স্তম্ভ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধঞ্জলি অর্পণ করেন দিনাজপুর শহরের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় ওয়ার্ড আওয়ামলীগের সভাপতি মোবারক হোসেন গিটার, সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান নভেল, মহিলা আওয়ামলীগ নেত্রী আইরিন লতিফ, আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডঃ রুবেল, মুজিদ হোসেন, জাহিদ, সুব্রত চক্রবর্তী পপ্পা, ফরিদ, রুবেল, রাসেল, বুশরা, জেসমিন, কাকুলী, গিতা, রাশেদ ওয়ার্ড আওয়ামলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস-২০১৪ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সকাল ১০টায় শিশু একাডেমী অডিটোরিয়ামে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচিত্র প্রদর্শনী শিশুদের মাঝে প্রদর্শিত হয়। এরপর বেলা ১২টায় শিশু একাডেমীর জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল আলম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিচালনা করেন মাওঃ মোঃ বেলাল হুসাইন।

দিনাজপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের উদ্বোধন

স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পশ্চিম রাজারামপুর গ্রামবাসী’র দীর্ঘ প্রত্যাশিত শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে রোববার।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি স্তম্ভ নির্মিত হওয়ায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলছে।শনিবার বিকেলে এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাবেক সাংসদ আব্দুল মালেক সরকার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল জব্বার, বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফ আলী। সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তমিজউদ্দিনের পুত্র আলহাজ্ব রুস্তম আলী, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজিমউদ্দিন আহমেদের পুত্র মহিরউদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য আনসার আলী ও মিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক একরাম তালুকদার। অনুষ্ঠানে গাজীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ নুরুল ইসলাম মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
বিরল উপজেলার পশ্চিম রাজারামপুর গ্রামে পুনর্ভবা নদীর তীরে শহীদদের সমাধিস্থলের পাশে শনিবার বিকেলে ফলক উম্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের উদ্বোধন করা হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়াও শহীদদের কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের নির্মানকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন।
এদিকে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান সম্পন্ন হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তমিজউদ্দীন আহমেদের জৈষ্ঠ্যপুত্র আলহাজ্ব রুস্তম আলী জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৩ বছর ধরে তারা স্বজন হারানোর বেদনা বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিল। সরকারী স্বীকৃতি তো দুরের কথা তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে সরকারীভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান করা হয়েছে এবং তা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করায় কিছুটা হলেও তাদের স্বজন হারানোর বেদনা লাঘব হয়েছে। পাশাপাশি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মাও শান্তি পেয়েছে। এতে বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজিমউদ্দিনের পুত্র মহিরউদ্দিন আহমদও জানান একই কথা।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তমিজউদ্দীন আহমেদের নাতি আনসার আলী এবং অপর নাতি শিক্ষা কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান হওয়ায় সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এখন তারা আর কিছুই চাননা, চান শুধু রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। তারা বলেন, বিগত দিনগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকায় তারা স্বীকৃতি পায়নি। এখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে। তাই তারা এই সরকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান এই দুজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শাহাতদ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল মালেক সরকার, দবিরুল ইসলামসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারাও সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন মুক্তিযোদ্ধা তমিজউদ্দিন আহমেদ ও মুক্তিযোদ্ধা আজিমউদ্দিন আহমেদ।