কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত কর্মকর্তা যশোরের কেশবপুরের রাজাকার কমান্ডার আমিন উদ্দিন ও কারাগারে আটক জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ১৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার তৃতীয় দফা তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। ট্রাইবুনালের তদন্ত কর্মকর্তা চীফ কো-অর্ডিনেটর (আইজি) আব্দুল হান্নান খান ১০ ডিসেম্বর বুধবার সকালে ও বিকেলে কেশবপুর থানায় মামলার বাদী ও সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ এবং রাজাকারদের যুদ্ধাপরাধ সংঘটিতস্থল চিংড়া, বগা, ভান্ডারখোলা ও গৌরীঘোনা পরিদর্শন করেন।

কেশবপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বাদি হয়ে ১৯৭১ সালের ৮ ও ৯ আগষ্ট গৌরীঘোনার ইসমাইল হোসেন, বগার বশির গোলদার, চিংড়ার চাঁনতুল্যা, সতীশ সরকার, কার্ত্তিক কর্মকারসহ স্বাধীনতাকামি মানুষদের হত্যা ও বাড়িঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় ১১/৫/২০১০ খ্রি. তারিখে যশোর আমলী আদালতে ১৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে পি-১৪১/১০ নং অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত রাজাকাররা হলেন শ্রীরামপুর গ্রামের আমিনুদ্দিন, হিজলডাঙ্গা গ্রামের মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন ও আব্দুল বারী মোড়ল, আলতাপোল গ্রামের আব্দুল খালেক, ভরতভায়না গ্রামের হাসেম আলী, আনছার মোল্যা, মোকছেদ সরদার, কেসমত আলী, আনছার ফকির, আগরহাটি গ্রামের আব্দুল বারী ওদুদী, ভান্ডারখোলা গ্রামের হোসেন আলী, বেলকাটি গ্রামের আকবর আলী, মোমিনপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ মোড়ল, সাতবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল গণি শেখ ও নেহালপুর গ্রামের ইব্রহিম কারিগর। সে সময় বিজ্ঞ আদালত অভিযোগের তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেশবপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। থানার তৎকালীন ওসি মীর রেজাউল হোসেন তদন্ত করে ৫/৮/২০১০ তারিখে ১/১৩৯ নং মামলা রেকর্ড করে আদালতে পাঠান।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে প্রেরণ করেন। উপজেলার সাতবাড়িয়ার মশিয়ার রহমান দফাদার, জাহানপুরের ওমর আলী, মহাদেবপুরের হায়দার আলী ও ভেরচীর আবু তালেব বাদি হয়ে বিজ্ঞ আদালতে যুদ্ধাপরাধের আরও ৪টি মামলা করেন। পরবর্তীতে বাদিরা ওই মামলা প্রত্যাহারের আবেদনকরলেও তা প্রত্যাহার হয়নি বলে ট্রাইবুনালের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। দুপুরে তদন্ত কর্মকর্তা ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মোতালেব দফাদার হত্যা মামলার বাদী আওয়ামীলীগ নেতা মশিয়ার রহমান দফাদারের জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং স্থানীয়দের নিকট ঘটনার সবিস্তার জানেন। এ সময় মামলার বাদী মশিয়ার রহমান দফাদার তদন্ত কর্তার সামনে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল জলিল তদন্তের কথা স্বীকার করে বলেন, মামলাটি যেহেতু যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুন্যালের সেহেতু মামলার যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের জন্য চীফ কো- অর্ডিনেটর তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।
