শ্যামলবাংলা বিনোদন : বিশিষ্ট অভিনেতা খলিলউল্যাহ খান আর নেই। ৭ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি (ইন্নালিল্লাহি……….রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর। তিনি তিন ছেলে ও তিন মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার আরও দুই ছেলে ছিলো। বাবার আগেই তারা চিরবিদায় নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। শক্তিমান এই অভিনেতার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন খলিল। তার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অসুস্থ খলিলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে জন্মেছিলেন খলিল। তার স্ত্রীর নাম রাবেয়া খানম। ঢাকার মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে থাকতেন তিনি। হাসপাতাল থেকে এখানেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। বাসার নিকটস্থ গোরস্তানে তাকে বাদ আছর দাফন করা হয়।
মঞ্চ দিয়েই খলিলের অভিনয় জীবন শুরু হয়। কলিম শরাফী ও জহির রায়হান পরিচালিত ‘সোনার কাজল’ ছবিতে নায়ক হিসেবে রূপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। এই ছবিতে তার নায়িকা ছিলেন সুলতানা জামান ও সুমিতা দেবী। এরপর নায়ক হিসেবে ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’, ‘প্রীত না জানে রীত’, ‘কাজল’, ‘জংলীফুল’, ‘সঙ্গম’সহ আরও কয়েকটি ছবিতে কাজ করেন তিনি। প্রতিটিই ছিলো বেশ ব্যবসাসফল।
ছবির নায়ক হওয়ার মাধ্যমে রূপালি পর্দায় অভিষেক হয় তার। গুণী এই অভিনেতা তিন শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন। চিত্রনায়িকা কবরী প্রযোজিত ও আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘গুণ্ডা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন কিংবদন্তী অভিনেতা খলিল। রাজ্জাকের সঙ্গে ‘বাপ বড় না শ্বশুড় বড়’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এরপর আর নতুন কোনো ছবিতে দেখা যায়নি তাকে।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন খলিল। তার অভিনীত নাটকের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিটিভিতে প্রচারিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’। অভিনয়ের পাশাপাশি দুটি ছবি প্রযোজনা করেছিলেন খলিল। এর মধ্যে ‘সিপাহী’পরিচালনা করেন কাজী হায়াৎ। আর মালেক আফসারীর পরিচালনায় ‘এই ঘর এই সংসার’ছবিতে অভিনয় করেন প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ। অভিনয়ে পুরোদস্তুর ব্যস্ত হওয়ার আগে বাংলাদেশের আনসারের কর্মকর্তা ছিলেন খলিল। তিনি বাংলাদেশ চলচিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিতীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
