ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুর সদর বাজারে বিক্রির জন্য আনা মৃত গরুর আড়াই মণ মাংস জব্দ করেছে রাজাপুর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাজাপুরের মাংসের বাজারের একটি কাঠের বাক্সে রাখা অবস্থায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ জব্দ করেছে। তবে পুলিশের অভিযান টের পেয়ে এ গোশত ব্যবসায়ীরা মাংস রেখে কসাইরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে গোপনে রাজাপুর বাজারে নুরুল ইসলাম কসাইয়ের পুত্র মনির কসাই ও কবির কসাই জবাই করা গরুর মাংস বাক্সভর্তি করছিলেন। এসময় মাংস থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা বিষয়টি সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পেয়ে প্রায় আড়াই মণ পচা মাংস জব্দ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী রাজিব খান বলেন, ‘এর আগেও মরা গরুর মাংস বিক্রির কথা লোকমুখে শুনেছি। কিন্তু ওদের ধরার জন্য আমরা অনুসন্ধানে ছিলাম। এবার হাতেনাতে ওদের ধরতে পেরেছি।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর প্রত্যক্ষদর্শীর জানায়, কসাই হলেও কসাই নুরুল ইসলামের পুত্র মনির কসাই তার সহযোগী কবির সহ কয়েকজন কে সাথে নিয়ে স্থানীয় বাজারে দীর্ঘদিন ধরে মাংসের ব্যবসা আড়ালে মরা ও পচা গোশত বিক্রি করে আসছিল।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার উপ-পরিদর্শক আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি কাঠের বাক্সভর্তি মাংস জব্দ করেছি। দুর্গন্ধযুক্ত উক্ত মাংস প্রাথমিক ভাবে মরা গরুর বলে ধারনা করা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্ততি চলছে বলেও জানান তিনি।’
রাজাপুর উপজেলা ভ্যাটেনারি সার্জন অলোকেশ কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা ওই মাংসের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘পশু জবাই ও এর সার্বিক বিষয়ে ভ্যাটেনারি সার্জনরা তদারকি করেন। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।’
অভিযুক্ত মনির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওটা মরা গরুর মাংস নয়, অন্যস্থানে জবাই করে এখানে আনা হয়েছে। তবে বিক্রির একদিন আগে মাংস কেন বাক্সভর্তি করা হচ্ছে এর কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।’
জেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ আঃ রব জানায়, যে কোন গরু বা পশুর মাংস বিক্রি করতে হলে বিধি অনুযায়ী প্রথমে প্রানী সম্পদ বিভাগের ভ্যাটেনারি সার্জন কর্তৃক সীল ও অনুমোদন পত্র সংগ্রহ করতে হবে। এরপর পশুটি স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে জবাই করা ও মাংস বানানোর কাজে নিয়োজিত কর্মীদের দেহ রোগমুক্ত কিনা তা দেখা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শকের দায়িত্ব। রাজাপুরের বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন বলে জানান।
