ads

মঙ্গলবার , ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় জাতীয় কবির ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা : মানবিক চেতনার মহীরুহ-ছায়ায় বাঙালিত্বকে পুষ্ট করেছেন নজরুল

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪ ১০:৪৯ অপরাহ্ণ
কুষ্টিয়ায় জাতীয় কবির ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা : মানবিক চেতনার মহীরুহ-ছায়ায় বাঙালিত্বকে পুষ্ট করেছেন নজরুল

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে নজরুল একাডেমী কুষ্টিয়া জেলা শাখার আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাপ্তাহিক ইস্পাত পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী।
নজরুল একাডেমী কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি আবদুর রশীদ চৌধুরীর
সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরোয়ার মুর্র্শেদ রতন, কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম সম্পাদক শাহীন সরকার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, নজরুল একাডেমী কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন নজু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাপ্তাহিক ইস্পাত পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী বলেন, ১৮৯৯ সালের ২৪ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায়। ১৯০৮ সালে মাত্র নয় বছর বয়সে পিতা কাজী ফকির আহমেদের মৃত্যু তাকে পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করে। মাত্র ১০ বছর বয়সেই গ্রামের মক্তব থেকে নিম্ন প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে রুটির দোকানে কাজ, সাহেবের বাড়িতে চাকরি, এমনকি হাজি পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেন। পিতৃব্য কাজী বজলে করিমের প্রেরণায় তিনি লেটো দলে যোগ দেন। জীবন বিপন্ন করে মাতৃভূমিকে ভালোবাসা, সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচানো, দ্রোহের আগুনে কালাকানুনকে পোড়ানোর ক্ষমতা ছিল নজরুলের মধ্যে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরোয়ার মুর্র্শেদ রতন বলেন, মানবিক চেতনার মহীরুহ-ছায়ায় বাঙালিত্বকে পুষ্ট করেছেন নজরুল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের থাবায় বাঙালি যখন পর্যুদস্ত, মানবতা যখন রক্তাক্ত তখনই নজরুল হয়ে ওঠেন কালবৈাশাখীর মতো ভয়ঙ্কর। লক্ষ নির্যাতিত মানুষের প্রতিনিধি হয়ে নিজেই জ্বলে ওঠেন মশাল হাতে।
মাত্র ২২ বছরের সাহিত্য জীবনে তিনি অসংখ্য ছড়া, কবিতা, গান, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও নাটক রচনার পাশাপাশি বেশ কিছু পত্রিকারও সম্পাদনা করেছেন।
বাংলা সাহিত্যে কবি নজরুল ইসলামই প্রথম প্রেম ও দ্রোহের সম্মিলন ঘটান। বাংলা কাব্যকে সম্পৃক্ত করেন সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে। পরাধীন শৃঙ্খলিত জাতির স্বাধীনতার স্পৃহাকে জাগ্রত করতে তিনি বিদ্রোহের গান শুনিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের অহংবোধকে জাগিয়ে তুলতে লেখনী দিয়ে বাজিয়েছেন প্রেমের মোহন বাঁশি। তিনি ছিলেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সার্বজনীন মুক্তি ও মানবতার মূর্তপ্রতীক। আমাদের রণসঙ্গীত ‘চল্ চল্ চল্’-এর রচয়িতাও ছিলেন তিনি।
কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম সম্পাদক অপর বিশেষ অতিথি শাহীন সরকার তার বক্তব্যে বলেন, চুরুলিয়া গ্রামের খড়ে ছাওয়া মাটির ঘর ছিল যার জন্মকান্নার প্রথম সাক্ষী। দুঃখের সাথে যার চিরচেনা জীবন। বিদ্রোহ শব্দের সাথে ছিল যার কান্তিহীন একাট্টা; তিনি বিদ্রোহী কবি, গণমানুষের কবি, প্রতিবাদের কবি, প্রতিরোধের কবি, কাজী নজরুল।
সভাপতির বক্তব্যে নজরুল একাডেমী কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি আবদুর রশীদ চৌধুরী বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের সালারের একটি গ্রামের কালী মন্দিরে কালীসাধনা করতেন। নজরুল সিয়ারসোল স্কুলে পড়ার সময় ৫টাকা মাসিক চুক্তিতে একটি ট্রেনের গার্ডকে তার বাড়ীর খাবার ট্রেনে পৌছে দিতেন। নজরুল স্কুলে পড়ার সময় মাসিক ৫টাকা হারে ষ্টাইপেন্ড পেতেন। এদিয়ে তার পড়ালেখার খরচ চলতো।
সভাপতি তার বক্তব্যে আরও বলেন, কৈশোরের কষ্ট আপন জীবনে উপলব্ধ ছিল বলেই শিশু-কিশোরদের ভালোবেসে লিখেছিলেন অসংখ্য কবিতা-গান। ১৯২৬ সালে ডিএম লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত ‘ঝিঙেফুল’ এবং ১৯২৭ সালে প্রকাশিত ‘সাতভাই চম্পা’ কিশোর কাব্যগ্রন্থে সেইসব অনবদ্য গান-কবিতার সংযোজনে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা শিশু সাহিত্য। ‘ঝিঙেফুল’ কবিতাটি সেই সমৃদ্ধ ধারার প্রথম আলোকিত উচ্চারণ। যেখানে সবুজ পাতার বনে ফিরোজিয়া ফিঙের উপমায় যথার্থতা পেয়েছে ঝিঙেফুল। লকলকে লতার কানে ঝুলে থাকা স্বর্ণের দুল- কবির কল্পনায়, কিশোরের বাস্তবে ঝিঙেফুল। কিশোর-কিশোরীরা যে ফুল ভালোবেসে পৌঁছতে পারে ভাবনার সবুজ রাজ্যে অনায়াসে।
স্বাগত বক্তব্যে নজরুল একাডেমী কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও বিশিষ্ট ছড়াকার আশরাফ উদ্দিন নজু তার বলেন, অন্ধকার থেকে শিশু-কিশোরদের শিশুদের আলোর মুখোমুখি করতে নজরুলের চেষ্টা ছিল প্রাণান্ত। আলোর পানে হাত তুলতে শিশুকে করেছেন তিনি সরাসরি আহ্বান। চেয়েছেন আধো বোলে অবারিত আলোর প্রার্থণা। উদ্বুদ্ধ করেছেন চকচকে দৃষ্টিমুখর আলোর পথে হাঁটতে।
পরে নজরুলেরর কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী মজিবর রহমান, অধ্যাপক পিন্টু আশফাক, ডাঃ সুকুমার কুন্ডু, দীপক কুমার বসু, ডাঃ রবিউল হক খান, শেখ আবুল কাশেম ও জাহিদুজ্জামান।
এরপর নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীত শিল্পী এবং গবেষক এ্যাড. সুব্রত চক্রবর্তী, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার শিল্পী সুজন রহমান, টিপু সুলতান ও দীপক কুমার বসু।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন কণ্ঠরাজ কবি শুকদেব সাহা।
অনুষ্ঠানে নজরুলপ্রেমী সর্বস্তরের সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!