নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়ায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের শিশু, কিশোর, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধসহ সকলের মাঝে সাপ আতংক দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার ৯ নং তাজপুর ইউনিয়নের থরসতি গ্রামের প্রায় ২০ জন সাপে কেটে আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। চলছে গ্রাম্য কবিরাজ ও রোঝাদের ঝাড়ফুকের জমজমাট অর্থ বাণিজ্য।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল খরসতি গ্রামে প্রায় গত এক সপ্তাহ ধরে শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধসহ সকলের মাঝে চরম সাপ আতংক দেখা দিয়েছে। দিনে ও রাতে হঠাৎ করে মানুষের হাতে ও পায়ে সাপের কামড়’র দাগ দেখা যায়, অনেকেই জালা পোড়াও অনুভব করেন। এনিয়ে এলাকার ছোট-বড় সকলের মাঝে দেখা দিয়েছে আতংক। চলছে গ্রাম্য কবিরাজ ও রোঝাদের ঝাড়ফুকের জমজমাট অর্থ বাণিজ্য। সাপে কেটে এপর্যন্ত আহত হয়েছে, খরসতি গ্রামের জুয়েল, মকবুল, বারেক, রানা, মুর্শিদা, আজাদ, অন্তর, ফাতেমা, শান্তনা, আদরী, হারুন, আব্দুর রাজ্জাক, মরিয়ম বেগম, রত্মা, মরিজান, মৌসুমী, সাহানা, আব্দুল সাত্তার, শহিদুল প্রমূখ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস জানান, প্রতিদিনই দুই থেকে তিন জনকে সাপে কাটে। কিন্তু কেউ এ পর্যন্ত সাপ দেখেননি। হাতে-পায়ে দাগ ও জ্বালা পোড়া দেখে স্থানীয় রোঝা বিষ নামিয়ে দেয়। অনেকেই আবার দেড় থেকে দু’হাজার টাকা খরচ করে পাওটা গ্রামের কবিরাজ চিত্তঘোষের কাছে গিয়ে বিষ নামাচ্ছে।
স্থানীয় চকিদার শ্রী তুলসি রবিদাস জানান, সাপের বিষ নামাতে গ্রাম্য কবিরাজ ও রোঝাদের চার ‘শ’ থেকে পাঁচ ‘শ’ টাকা দিতে হচ্ছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন জানান, তিনি সরোজমিনে গিয়ে সাপে কাটা রোগীদের ঝাড়ফুক দিতে দেখেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
পূর্ব বিরোধের জের
সিংড়ায় কৃষকের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষরা ॥ আহত ২

নাটোরের সিংড়ায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে মকবুল হোসেন নামের এক কৃষকের বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষরা। রোববার রাতে উপজেলার দূর্গম পল্লী সোয়াইড়-বালাল গ্রামে এই হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের হামলায় ২ জন আহত হয়। সরোজমিনে গিয়ে সোমবার দুপুরে দেখা যায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও আতংক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সোয়াইড়-বালাল গ্রামের ১৪একর সরকারী খাস পুকুর নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় দুই গ্রুপ রবিউল ইসলাম ও আবু খা এর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। গত ২৯ মার্চ প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় স্থানীয় আ’লীগ নেতা আবু খা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। পরে রবিউল গ্রুপের ছোট-বড় ২৪ জনকে হত্যার দায়ে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে কয়েকজন উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে আসায় আবারও এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরে রোববার রাতে আসামীদের বাড়ি ছাড়া করতে কৃষক মকবুল হোসেনের বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হামলা ও ভাংচুর চালায় প্রতিপক্ষগ্রুপের বাবু ও আশরাফ আলীসহ ৮ থেকে ১০ জন। এসময় তাদের বাঁধা দিতে গেলে আমেনা (২০) ও আলেয়া বেগম (৪০) আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মকবুল হোসেন’র স্ত্রী আয়েশা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বাবু’র নেতৃত্বেই তার বাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত তাদেরকে বাড়ি ছাড়ার জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তবে প্রতিপক্ষ গ্রুপের ওসমান আলী জানান, বাড়ি ভাংচুর তাদেরই সাজানো নাটক। বরং আসামীরা জামিনে ছাড়া পেয়ে হত্যা মামলা উঠায় নেওয়ার জন্য তাদেরকেই হুমকি দিচ্ছে।
সিংড়া থানার ওসি তদন্ত নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
