কাঠালিয়া (ঝালকাঠি)প্রতিনিধি : প্রায় শত বছরের পুরনো কচুয়া বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে কোন সময় বিষখালী নদীর শাখা কচুয়া নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। ঘটে যেতে পারে বড় রকমের দূর্ঘটনা। কর্তৃপক্ষ দায় এরানোর জন্য বিদ্যালয়টি ক্লাশের অনুপোযেগী ঘোষনা করলেও বিকল্প কোন ব্যাবস্থা না করায় প্রতিটি মুহুত আতংকে কাটছে শিক্ষক – শিক্ষর্থীদের। ঝালকাঠির কাঠালিা উপজেলার ৫১ নং কচুয়া বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় শত বছরের পুরনো এ বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২৭০ জন শিক্ষার্থী ও ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। মুল ভবনটি ২০০২ সালে নির্মিত হলেও এর অবস্থা খুবই নাজুক। এ ভবনটি বিষখালী নদীর শাখা কচুয়া নদীর ভাংঙ্গনের মুখোমুখি এসে দাড়িয়েছে । যে কোন মুহুর্তে তলিয়ে যেতে পারে নদীর গর্ভে। চরম আতংক ও হতাশা নিয়ে শিক্ষক – শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাশ করছেন। বিদ্যালয়টির ক্লাশ রুমে শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ না থাকায় মেঝেতে বসে ক্লাশ করছেন। বিদ্যালয়টি নদীর তীরবর্তী হওয়ায় স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ক্লাশ রুম প্লাবিত হয়। গত ১ বছর পূর্বে কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টি ক্লাশের অযোগ্য ঘোষনা করলেও এখন পর্যন্ত বিকল্প কোন স্থান বা নদী শাসনের ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়নি। ফলে অনেক অবিবাবকরাই এ বিদ্যালয়টিতে তাদের সন্তানদের লেখা পড়া করাতে আগ্রহী নন। কাঠালিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম খান। তিনি দায়সাড়া ভাবে বিদ্যালয় ভবনটি অযোগ্য ঘোষনা করলেও বিকল্প ক্লাশের ব্যাবস্থা করেরনি। প্রধান শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস (তানিয়া) জানান, ক্লাশের অযোগ্য ভবন ও নদীর তীব্র ভাঙ্গনে আতংক হতাশায় বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। তবে কর্তৃপক্ষ ২ বার স্কুলটিতে ক্লাশ না করার জন্য চিঠি দিলেও শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিস্বাৎ এর চিন্তা করে ঝুকি পুর্ন ভবনে ক্লাশ নিচ্ছে।

বলৎকারী সাংবাদিক দিবসকে রক্ষায় মরিয়া
ঝালকাঠিতে এ্যাডভোকেট আক্কাস-মানিকের বিরুদ্ধে
আইনজীবী সমিতির ভিজিলেন্স এর তদন্তে
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ- ঝালকাঠিতে চিহ্নিত বলৎকারী দিবস তালুকদারকে রক্ষায় প্রেসক্লাব সেক্রেটারী আইনজীবী সমিতির সদস্য এ্যাডভোকেট মোঃ আককাস সিকদার ও তার পাটনার সাংবাদিক এ্যাডভোকেট মানিক আচার্য্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দিবসের বিরুদ্ধে নির্যাতিত রাতুল (১৫) এর দায়েরকৃত মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এই দুই আইনজীবী ‘পুলিশকে ম্যানেজ করে’ উল্টো তাকে একটি মামলার আসামী করিয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। তাদের তদবিরের কারনে গত ১ সেপ্টেম্বর (দ:বি: ৩৭৭ ধারায় প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে পুরুষ কর্তৃক পুরুষকে জোরপূর্বক যৌন সহবাস করার অপরাধে) রাতুলের অভিযোগ রেকর্ড হলেও আসামী সাংবাদিক-ব্যবসায়ী তথা ডিজিএফআই’র সোর্স দাবীদার দিবস তালুকদার কে এখোন পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করায় বাদীর পরিবার আতংকে দিন কাটাচ্ছে। অন্যদিকে প্রেসক্লাব ও আইনজীবী সমিতির প্রভাব বিস্তার করে অভিযুক্ত আইনজীবীদ্বয় রাতুলের পিতা ও মামলার প্রধান স্বাক্ষীকে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি ও হুমকি-ধূমকি দেয়ার তারা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। এ কারনে রাতুলের পিতা রতন মন্ডল সমিতির সদস্য আইনজীবীদ্বয়ের হাত থেকে নিজেদের নিরাপত্তা ও আইনানুক প্রতিকার পাওয়ার জন্য আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতি বার এক লিখিত আবেদন জানিয়েছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দিবস তালুকদার তার বেকারীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দিয়ে ও বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে গত ২৫ জুলাই থেকে কিশোর রাতুল কে বলৎকার করে আসছে। সর্বশেষ ২৭ আগষ্ট গভীর রাতে ঝালকাঠির নতুন ষ্টেডিয়ামের অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্যালারীতে নিয়ে রাতুলকে জোরপূর্বক বলৎকার করলে মলদ্বার ফেটে রক্তক্ষরন ও পেটের ব্যাথা শুরু হয়। এক পর্যায় ২৯ আগষ্ট সকালে অসুস্থাবস্থায় তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং ওইদিন বিকালে থানায় সাংবাদিক দিবস তালুকদারকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করে। এ অবস্থায় অভিযোগের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত ও ধামাচাপা দেয়ার লক্ষে দিবসের সহযোগী দুই সাংবাদিক-আইনজীবী আক্কাস ও মানিক তৎপর হয়ে ওঠে। তারা পুলিশের সাথে যোগসাজশে অসুস্থ রাতুলকে একটি মামলার ডুকিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তর করায়। আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী, প্রথমআলো প্রতিনিধি ও আইনজীবী সমিতির সদস্য আক্কাস সিকদার, মানিক আচার্য সহ আরো কয়েকজন মিলে রতন মন্ডলকে দিবসের বিরুদ্ধে দায়েকৃত মামলা তুলে নিতে নগদ অর্থের প্রলোভন, বিভিন্ন রকম হুমকি সহ মামলার দিয়ে জেলের ভাত খাওয়ানোর হুমকি দেয়। এমন কি উক্ত আইনজীবীদ্বয় রতনের বাড়ীওয়ালা ও তারপুত্র রাতুলে মামলার প্রধান স্বাক্ষী বুুগার মোঃ মনির সর্দারকেও মারধর ও মামলার আসামী করার প্রকাশ্য হুমকি দেয়। দিবসের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থিক সুবিধা নিয়ে তারা যে কোন মূল্যে তাকে রক্ষায় ব্যাপক তৎপরতা চালায়। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে নির্যাতিত রাতুলের পিতা রতন মন্ডল আইনজীবী সমিতির কর্মকর্তাদের কাছে এ্যাডভোকেট আককাস ও মানিকের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানায়।
এ ব্যাপারে আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকারী কৌসুলী পিপি এ্যাডভোকেট আব্দুল মন্নান রসুল বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর আইনজীবী সমিতির দুই সদস্যের বিরুদ্ধে দেয়া লিখিত অভিযোগটি বিধি অনুযায়ী ভিজিলেন্স সদস্য এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ কে দেয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করলে তার ভিত্তিতে নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

নলছিটিতে সিঁদ কেটে ঢুকে পিতা-মাতাকে বেধেঁ স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ- সিদ কেটে ঘরে ঢুকে পিতা, মাতা ও ভাইকে বেঁধে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষন ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষর্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গৃহীত মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে ১১ তারিখ পর্যন্ত পেছানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ নাসির উদ্দিন জানায়, ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষন ঘটনার পরের দিন পুলিশ প্রথমে ডাকাতী ও ধর্ষন মামলা না নিয়ে কৌশলে দস্যুতা অভিযোগে এজাহার নং-৭ রেকর্ড করে। পরে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা, প্রধান শিক্ষক ও কয়েক সাংবাদিকের প্রতিবাদের মুখে ৬ সেপ্টেম্বর ডাকাতী ও ধর্ষন মামলা রুজু করে। স্কুল ছাত্রীর জন্য ন্যায় বিচারের পক্ষে ম্যানেজং কমিটির সভাপতি তছলিম চৌধুরী, সদস্য বজলুর রহমান, সালেহ মাহামুদ ইছা মুহদি, সহিদুল ইসলাম পান্নু সহ সদস্য ৩ কাউন্সিলর সবাই একমত রয়েছি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জলিলুর রহমান খান বলেন, ঘটনার প্রতিবাদে আমরা পরের দিন ৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের নতুন কমিটির মিটিংয়ে সমস্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিবাদে ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে ০৯ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন ও স্মারকলীপি প্রদান কর্মসূচী গ্রহন করে ছিলাম। কিন্তু থানার ওসি আবুল খায়েরের অনুরোধ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শের প্রেক্ষিতে দুদিনের জন্য কর্মসূচী পেছানো হয়েছে। ধর্ষিতার পিতা বেলায়েত কাজী ও পুলিশ জানায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সিঁদ কেটে একদল দুর্বত্ত তাদের ঘরে প্রবেশ করে বেলায়েত কাজী, তার স্ত্রী ও পুত্র কে মারধর করে বেধে রাখে। দুর্বত্তরা তার মেয়ে নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী (১৫) কে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এ সময় ধ্বস্তাধ্বস্তির এক পর্যায়ে মুখ থেকে কাপড় খুলে প্রধান ধর্ষক মল্লিকপুর গ্রামের হাবিব হাং এর বখাটে পুত্র রায়হানকে (২০) কে তারা চিনে ফেলে। পরের দিন পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত প্রধান ধর্ষক রায়হানকে স্থানীয় আ’লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস লস্করকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থল থেকে ও তার স্বাকারোক্তি অনুযায়ী মল্লিকপুর গ্রামের কালুর পুত্র সুমনকে (২১) কে গ্রেপ্তার করে। এব্যাপারে নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) জানিয়েছেন, পুলিশ তাৎণিক অভিযান চালিয়ে ধর্ষিতা পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী প্রধান ধর্ষনকারী রায়হান ও সুমন নামে ২জনকে আটক করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের রায়হান অকপটে ওই রাতের ঘটনার বর্ননা দিয়ে তারা ১০ বন্ধু পরিকল্পনা করে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের সহ তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। ৭ জুলাই রবিবার ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহন ও ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ঝালকাঠীতে সম্পন্ন হয়েছে। শীগ্রই বাকী আসামীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
