মেহের আমজাদ,মেহেরপুর : নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অধীনে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগে জ্ঞানের প্রদীপ জ্বেলে চলেছে মেহেরপুর মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ। ২০০২ সালে দু’টি ট্রেড নিয়ে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটিতে আরো দু’টি ট্রেড খোলা হয়েছে। বর্তমানে ৪টি ট্রেডে প্রায় সোয়া দু’শত শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। প্রতি ট্রেডে সীমিত শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ থাকলেও এরই মধ্যে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী পাশ করে বের হয়েছে এ বিদ্যাপীঠ থেকে।
সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলীর স্মরণে ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ। মেহেরপুর জেলা শহর থেকে ২ কিলোমিটার পূর্বে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের দক্ষিন পাশে ৮৩ শতক জমির উপর এটি অবস্থিত। প্রতিষ্ঠাকালে এটিতে কম্পিউটার অপারেশন ও সেক্রেটারিয়েল সায়েন্স নামের দু’টি ট্রেড চালু ছিল। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ও পছন্দে ২০০৫ সালে এতে নতুন ট্রেড হিসেবে একাউন্টটিং চালু করা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে উদ্যোক্তা উন্নয়ন নামের আরো একটি ট্রেড চালু করা হয়েছে। প্রথম দিকে প্রতি ট্রেডে ২০ জনে করে শিক্ষার্থী ভর্তির সুবিধা ছিল। ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষার চাহিদা কারণে বর্তমানে কারিগরি শিক্ষা শিক্ষা বোর্ড প্রতি ট্রেডে ৩০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি সুযোগ করে দিয়েছে। সাথে সাথে নতুন নতুন ট্রেড চালুর অনুমতি দিয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটিতে ৪টি ট্রেডে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে ২৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২২৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোঃ শাহী উদ্দীন আরো জানান, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৭ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানে বিগত ৩ বছরের মোট ২৩৯ জন এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২২৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। যাদের মধ্যে ১১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গড় পাশের হার ৯৩ দশমিক ৩১। তিনি মনে করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে আন্তরিক এবং পরবর্তী বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান আরো ভালো হবে এবং পাশের হার আরো বাড়বে।
এদিকে প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক জানালেন, প্রতিষ্ঠানে রয়েছে নানা সমস্যা। মাঠের মধ্যে গড়ে ওঠা এইচএসসি ব্যবসায় ব্যস্থাপনা’র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বাউন্ডারি ওয়াল নেই। রাতে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার অভাব। কয়েকবার প্রতিষ্ঠানটিতে চুরি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের জানালা-দরজা ভেঙে কম্পিউটার ও ফ্যানসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নিয়ে গেছে চোররা। প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পাকা সংযোগ সড়ক না থাকায় শিক্ষক কমন রুম থেকে পাঠদানের জন্য ক্লাস রুমে যেতে বর্ষার সময় কাদা-পানি ও বৃষ্টির বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ছাত্র-ছাত্রীদেরও প্রশাসনিক ভবনে যেতে সমস্যা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, শহর থেকে দূরে হলেও প্রধান সড়কের ধারে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা লাভের জন্য এটি একটি উপযুক্ত বিদ্যপীঠ। তবে সমস্যা হলো- প্রতিষ্ঠানটিতে নেই ছাত্রাবাস। নেই ছাত্রীদের কমন রুম। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পাশে বাসস্টপেজ না থাকায় শহর ও দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের কলেজ যেতে বেগ পেতে হয়। বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য এটি বড় সমস্যা। তারা জরুরী ভিত্তিতে এর সমাধান দাবি করেছে।
এ প্রসংগে অধ্যক্ষ শাহী উদ্দীন আরো বলেন, অনেক দেন-দরবার করে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের ব্যবস্থাপনায় একটি ভবন তৈরি করে নেয়া সম্ভব হয়েছে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সব জায়গায় চেষ্টা করে প্রতিষ্ঠানের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করবেন তিনি।

মেহেরপুর শহরে মহিলা এমপির বাস ভবনে দিন-দুপুরে চুরি : চোর সন্দেহে দুই জন আটক
সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য সেলিনা আখতার বানুর মেহেরপুর শহরের বাস ভবনে দিন-দুপুরে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে তালা ভেঙ্গে চোরচক্র সাড়ে ১০ ভরি সোনার গয়না লুটে নেয়। এঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে মেহেরপুর শহরের মল্লিকপাড়ার রানা মিয়া (২৫) ও গোরস্থানপাড়ার ওয়াসিমকে (২৬) আটক করেছে পুলিশ।
মহিলা এমপি সেলিনা আখতার বানু জানান, সকালে তার বাড়ির লোকজন বাইরে গেলে চোরচক্র হানা দেয়। বাড়ির গ্রিল ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে এবং তারা শয়ন কক্ষের তালা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তারা সাড়ে ১০ ভরি সোনার গয়না লুট করে পালিয়ে যায়।
এদিকে খবর পেয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভুমি) ফরিদ হোসেন, সদর থানার ওসি (তদন্ত) তরিকুল ইসলামসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আটক সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশপাশি গ্রেফতার অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার শেখ।

মেহেরপুরে গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ
মেহেরপুর জেলা জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া সমিতির উদ্যোগে মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ের ৪৩তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন দু’দিন ব্যাপি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হেমায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান মোরাদ আলী, মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা খানম, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র ওঝা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তর্য রাখেন জেলা শিক্ষা অফিসার আজাহার আলী, সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
