মিজবাউল হক, চকরিয়া (কক্সবাজার) : দেশের অন্যতম মোবাইল কোম্পানি রবি’র সীম ব্যবহার করে প্রতারণার শিকার হচ্ছে শতশত গ্রাহক। রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে সীম বিক্রির নিয়মনীতি থাকলেও রবি এসব কিছুই মানছে না। তাছাড়া চকরিয়া পৌরশহরে সড়কের ওপর ব্যাঙের ছাতার মতো দোকান খুলে বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচার করে সীম বিক্রি এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে সাধারণ পথচারি নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।
একাধিক রবি’র গ্রাহক অভিযোগ করে জানান, একসময়ের মোবাইল কোম্পানি একটেল বর্তমানে রবি ভালো সার্ভিসের জন্য দ্রুতসময়ে গ্রাহকের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো। অন্যান্য মোবাইল কোম্পানির মতো রবি’র নানা রকমের প্যাকেজ ও ভিন্ন আঙ্গিকে বিজ্ঞাপন প্রচার করে তরুণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। দেশের এই শীর্ষ মোবাইল কোম্পানি একটেল নাম পরিবর্তন এবং মালিকানা বিক্রি করে নতুন নামে আসলেও বাড়েনি রবি’র কোন মান। বিশেষ করে চকরিয়া উপজেলায় রবি সীম ব্যবহার করে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। প্রতারিত হচ্ছে শতশত গ্রাহক। সীম বিক্রির ক্ষেত্রে মোবাইল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউকেশন কোম্পানি বিটিসিএলের নিয়মনীতি থাকলেও রবি এসব কিছুই মানছে না। একজনের সীম অন্যজনের নামে উঠানো এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। এদিকে ৩৪৫টাকার ওয়ান জিবি কিনার পর ব্যবহারের সময় দ্রুত এমবি শেষ হয়ে যায়। তাছাড়া অনেক সময় উঠানো সীম চালুও হয় না। বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানান, চকরিয়া পৌরশহরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান দখল করে ও সড়কের ওপর দাড়িয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো দোকান খুলে সীম বিক্রি করছে রবি। কোন ধরণের রেজিট্রেশন ছাড়াই বিক্রি করছে সীম। মাইকিং ও বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচার করে সীম বিক্রি এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। রেজিষ্ট্রেশনবিহীন সীম থেকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হয়। রেজিষ্ট্রেশন না থাকার কারণে অনেকসময় অপরাধীকে সনাক্তকরা সম্ভব হয় না।
রেজিষ্ট্রেশনবিহীন সীম বিক্রি করা জগন্যতম অপরাধ বলে জানান চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর। তিনি বলেন, এসব সীম ব্যবহার করে অনেক ব্যক্তিকে হুমকি ধমকি দেয়া হয়। সড়ক দখল করে সীম করলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। পুরো উপজেলায় এই কোম্পানির ১২৫টি কাস্টমার কেয়ার বা গ্রাহক সেবা কেন্দ্র রয়েছে। গ্রাহক সেবার জন্য এতো কেন্দ্র থাকলেও তাদের কোন ধরনের কম্পিউটার বা ভালো মানের প্রযুক্তি নেই। প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে কাস্টমার কেয়ারে রবির কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুদত্তর পাওয়া যায়নি।

চকরিয়ার বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চিংড়িঘের দখলের অভিযোগ
বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০একর বিশিষ্ট তিনটি চিংড়িঘের জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। ইউপি চেয়ারম্যান ওইসব চিংড়িঘের গুলো দখল করে অন্তত ১৫লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত করেছে। তিনি চিংড়িঘের ফেরত না দিয়ে ওল্টো ঘের মালিকদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এব্যাপারে ঘের মালিকগণ ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলা সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর মৌজার ৩নং হোল্ডারের ১০একর বিশিষ্ট চিংড়ি ঘের এলাকায় ৫৭, ৫৯ ও ৬১ নং চিংড়ি প্লট পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নের মাইজপাড়ার আজিজুল ইসলাম শাহনেওয়াজ, বদরখালী ইউনিয়নের ৩নং ব্লকের মাতারবাড়ি এলাকার মইনদ্দিন ও একই এলাকার আবু তাহের সরকার থেকে ১০একর করে ত্রিশ একর ইজারা নিয়েছেন। ওই চিংড়িঘের গুলো নতুনভাবে ইজারা নিয়ে ২০৩৪সাল পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে। তারা সরকারকে নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করে আসছেন। বর্তমানে ঘের মালিকগণ ত্রিশ একর চিংড়িঘের যৌথভাবে ভোগদখলে রয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে ওই ত্রিশ একর চিংড়ি ঘের গুলোতে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফের। চেয়ারম্যান আরিফ গত জানুয়ারী থেকে ঘের মালিকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকবার চাঁদা দাবি করে আসছিলো। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে প্রায়ই সময় ঘের দখলের হুমকি দিতেন। গত ১১জুলাই চেয়ারম্যানের লোক পরিচয় দিয়ে ১০/১২জন চিহিৃত সশস্ত্র সন্ত্রাসী ত্রিশ একর বিশিষ্ট চিংড়ি ঘের দখল করে নেয়। তারা ওইসব ঘেরের অন্তত ১৫লাখ টাকার মাছসহ বিভিন্ন মালামাল লুঠে নিয়েছে। ঘের মালিকরা ইউপি চেয়ারম্যানকে একাধিকবার দখল ছাড়তে অনুরোধ করলেও তিনি কোনমতেই ছাড়ছে না। এ অবস্থায় ঘের মালিকগণ নিরুপায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
ঘের মালিক আজিজুল ইসলাম শাহনেওয়াজের পুত্র এম আজিজুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ দীর্ঘদিন ধরে তাদের ঘেরে চাঁদা দাবি করে আসছিলো। তাকে চাঁদা না দেয়ার কারণে ইউপি চেয়ারম্যানের লালিত সন্ত্রাসী আবদুল হক, ফজল কাদের, আবদু ছাত্তার, জাকের হোসেন, কামাল উদ্দিন, মিন্টু, হেলাল উদ্দিন, গুনু মিয়া, নাছির উদ্দিন, নুরুন্নবী মাঝি ও নাছির ব্যাপক গুলি চালিয়ে চিংড়িঘের গুলো দখল করে নিয়েছে। তারা ঘেরের কর্মচারীদের পিঠিয়ে বের করে দিয়েছেন। দখল ছাড়তে একাধিকবার বলা হলেও এরপরও তিনি দখল ছাড়ছে না। তিনি আরো বলেন, চিংড়ি গুলো দখল করে অন্তত ১৫লাখ টাকা ক্ষতি করেছে। তাছাড়া ঘের গুলোর মেয়াদ ২০৩৪সাল পর্যন্ত রয়েছে। কোনমতেই ইউপি চেয়ারম্যান দখল ছাড়ছে না। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ ও তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র, আইজিপি, ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
