ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত আর অবহেলিত উপজেলা ভোলাহাটে টেলিফোন টাওয়ার ও তার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকা সত্বেও টেলিফোনের সংযোগ ও টেলিফোন সেটগুলি দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকায় এর ব্যবহার একেবারেই উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ টেলিফোন এণ্ড টেলি-কমিনিকেশন বোর্ড বর্তমানে বিটিসিএল নামে পরিচিত ভোলাহাটের আওতায় প্রায় সারে ৪ শত টেলিফোন সংযোগ থাকলেও তাদের ঐ পরিমান টেলিফোন সংযোগ গুলির মধ্যে শতাধিক সংযোগ নষ্ট রয়েছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে হযবরল অবস্থা থাকায় গ্রাহকদের মাঝে তীব্র চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বারবার লিখিত ও মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানালেও কোন প্রকার প্রতিকার হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার বিভিন্ন মহলের টেলিফোন গ্রাহকগণ। কিছুদিন এর সংযোগসহ সার্বিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার ছিলো খুবই ভালো এবং কলরেটও ছিলো কম। বর্তমানেও সেই রেট থাকলেও সংযোগ ক্রুটি আর টেলিফোনে কথা বলতে গিয়ে নানা ক্রুটি-বিচ্যুতি থাকায় টেলিফোন গ্রাহকদের হতে হচ্ছে নানা ভাবে আর্থিক হয়রানির শিকার। টেলিফোন গ্রাহকগণ ও সচেতনমহল বলছে, সরকার লাখ লাখ টাকা খরচ করে উপজেলায় টিএন্ডটি’র একটি টাওয়ারসহ অফিস, কর্মকর্তা-কর্মচারী রেখে আর্থিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থের সম্মুখীন হচ্ছে, “কথায় বলে সরকারী মাল দরিয়া ম্যা ঢাল”। টিএন্ডটি’র সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রে জানা গেছে, এক সময় ছিলো টেলিফোন এক্সচেঞ্জ-এ ফোন করার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কথা বলার ফুরসুত ছিলো না। সম্প্রতি টিএণ্ডটি থেকে টেলিফোন সংযোগ নেয়ার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করেও এলাকার গ্রাহকগণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দপ্তরে ধর্ণা দিতে হয়েছে। এখন যেন এ দপ্তরের ভোলাহাট আওতায় সকল টেলিফোনগুলি অকেজো হয়ে পড়েছে। আজ তথ্য-প্রযুক্তির যুগে এসে এর কার্যক্রম একেবারেই বিভিন্ন কোম্পানীর স্বল্প মূল্যের মোবাইল আসায় উপজেলার টিএণ্ডটি বোর্ডের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাহকগণ তাদের টেলিফোন সংযোগ দীর্ঘদিন ধরে না পাওয়ায় বিকল্প হিসেবে মোবাইলের উপর ঝুকে পড়তে দেখা গেছে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে টেলিফোন নামে কোন সংযোগ থাকবে না বলে এলাকার সচেতনমহল তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ভোলাহাট এক্সচেঞ্জ অফিস হতে উপজেলার প্রাণকেন্দ্র সন্ন্যাসীতলা-মেডিকেলমোড় পর্যন্ত ১নম্বর কেবিনেটের বেশীর ভাগই সংযোগ অচল, ৪নম্বর কেবিনেটের ৩০টিরও বেশী টেলিফোন সংযোগ খারাপ এবং উপজেলার গোপিনাথপুর এলাকার ৫নম্বর ডিপির সম্পূর্ণই টেলিফোন গুলি নষ্ট রয়েছে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, সামান্য ছোট্ট একটি মেশিন টিএন্ডটি টেলিফোন টাওয়ারে লাগালেই ভোলাহাট উপজেলার সর্বত্রই টেলিটক নামে বিভিন্ন মোবাইলে সিম ব্যবহার করতে পারবে বলে ঐ কর্মকর্তা জানান।
গ্রাহকদের অভিযোগে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর ধরে টেলিফোন সংযোগ ছাড়াই গ্রাহকগণ তাদের মাস শেষে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করে আসছে। এতে তারা যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছে তেমনি আর্থিক ভাবে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ্য। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনপ্রকার ভ্রুক্ষেপ নেই বলে এলাকাবাসীর টেলিফোন গ্রাহকগণ ক্ষোভের সাথে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে বিটিসিএল’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সহকারী প্রকৌশলী আসলাম হুদা বাদল এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা বিভিন্ন সুপারিশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবিহিত করা হয়েছে। যতদুর সম্ভব খুব তারাতারী ভোলাহাট উপজেলার টিএন্ডটি’র বিভিন্ন ক্রুটি সম্পূর্ণ সংযোগসহ অন্যান্য সমস্যাগুলির সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।