শাহনেওয়াজ খান সুমন, ঝিনাইদহ : সংঘর্ষ ও সংঘাতের জেলা ঝিনাইদহ। এখানে তুচ্ছ ঘটনায় মানুষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং গ্রামগুলোর ঘরে ঘরে রয়েছে দেশীয় অস্ত্র ঢাল, তলোয়ার, রামদা, সড়কি ও লাঠিসোটার মজুত। ফলে হতাহতের ঘটনা বাড়ছে।

বহুকাল আগ থেকে ঝিনাইদহ জেলায় গ্রাম্য দলাদলি রয়েছে এবং মোড়ল মাতুব্বরগণ এসব দল পরিচালনা করে থাকেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এক মাতুব্বরের সাথে অপর মাতুব্বরের শত্রুতা দীর্ঘদিনের। নিজের দল বড় করতে কূট চাল চালেন তারা। গ্রামে সৃষ্টি হয় অশান্তি। এ অশান্তি থেকে দুই দল সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গ্রাম্য ভাষায় বলে কাইজ্যা। শৈলকুপা উপজেলা দেবতলা গ্রামের তোয়াজ উদ্দিন বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে কাইজ্যা দেখে আসছেন। আগে হাটে কাড়া দিয়ে দিনক্ষণ ঠিক করে কাইজ্যা হতো। সরদার ভাড়া করে আনা হতো। হাজার হাজার মানুষ কাইজ্যা দেখতে ভিড় করত। তিনি নিজেও কাইজ্যা করেছেন বলে জানান।
এখন অবশ্য কাড়া দিয়ে বা দিনক্ষণ ঠিক করে কাইজ্যা হয় না। কিন্তু কাইজা বন্ধ হয়নি। প্রতি মাসেই জেলার কোন না কোন গ্রামে কাইজ্যা হয়। মানুষ হতাহত হয়। সব কাইজ্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয় না। পুলিশও বলতে পারে না কতটি কাইজ্যা হয়েছে। ছোটখাট কাইজ্যা পুলিশ আমলে নেয় না। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রচারিত ও পুলিশের তথ্য থেকে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলায় গ্রামে গ্রামে প্রায় ৪০টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছে অন্তত ১০ জন। আহত হয়েছে চার শতাধিক মানুষ। দুশোর বেশি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন সংঘর্ষের কথা স্বীকার করে বলেন, অনেক আগে থেকে এ এলাকায় গ্রামে গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে আসছে। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে সচেতনতামূলক সভা করছে। দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
