মো: আমির হোসেন আমু,দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: দেবিদ্বারে আন্তঃজেলা মোটর সাইকেল চোর চক্রের ৫সদস্যকে গ্রেফতারসহ ৩ মোটর সাইকেল উদ্ধার করেছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। গত মঙ্গল ও বুধবার কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের ৫সদস্য ও চোরাই ৩টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার পৌরসভার সাইলচর এলাকায় চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রয়ের বিষয়ে দরকষাকষির গোপন সংবাদে দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) মোঃ নুরুল ইসলাম মজুমদার ও সাইদুর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চুরি করা একটি পালসার ও একটি ডিসকভার মোটর সাইকেলসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারাম্পুর উপজেলার দরি-বাঞ্ছারাম্পুর গ্রামের (মতিন মাষ্টারের বাড়ির)’র জবি উল্লাহ্’র পুত্র মোঃ জুমন(২৭) এবং কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের (শাহ আলম চেয়ারম্যানের বাড়ির) রুপ মিয়া সরকারের পুত্র মোঃ খোকন সরকার(৩১), ও একই উপজেলার আড়ালিয়াকান্দি গ্রামের মোঃ রোকন মিয়ার পুত্র মোঃ লালন মিয়া(২৫)কে আটক করে। আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার জল্লীকান্দি গ্রামের মুর্শিদ মিয়ার বাড়ি থেকে আন্তঃজেলা মোটর সাইকেল চোর চক্রের অন্যতম সদস্য মোঃ খোরশেদ আলমের পুত্র নজরুল ইসলাম(২৮) ও একই গ্রামের খোকন ব্যাপারির বাড়ি থেকে মৃতঃ খোকন ব্যাপারির পুত্র মোঃ সোহাগ(২৬)কে একটি চোরাই পালসার মোটর সাইকেলসহ আটক করেন। তবে মোটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেট’র মূল হোতা আল আমীন ও তার সহযোগী ভাইগ্না (অজ্ঞাত) পলাতক রয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছেন ওরা বরিশালে অবস্থান করছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। তাদের আটকে পুলিশী অভিযান জোর তৎপর রয়েছে।
পুলিশ আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতদের জবানবন্দি অনুযায়ী জানা যায়, মোটর সাইকেল চুরি ৭ সদস্যের ওই মোটর সাইকেল চোরাই সিন্ডিকেট’র নেশা এবং পেশা। দল নেতা আল আমীন’র বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারাম্পুর উপজেলায়। তার সাথে আছে দূর্ধর্ষ মোটর সাইকেল চোর আপন ভাইগ্না (অজ্ঞাতনামা)। পথ চলতে চলতে চোখের পলকে ওরা মোটর সাইকেল চুরির কাজ শেষ করে ফেলে। মোটর সাইকেল যোগে পথ চলার পথে যে মোটর সাইকেলটি চোখে পড়ে সেটিকে টার্গেট করে চুরি করা। আল- আমীন মোটর সাইকেলে বসে পাহাড়া দেয় আর মোটর সাইকেল চুরিতে পারদর্শি ভাইগ্না নিমেষেই মোটর সাইকেলের লক ভেঙ্গে ষ্টার্ট দিয়ে চম্পট দেয়। দল নেতা আল আমীন চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রয়ের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারাম্পুর উপজেলার জুমন ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার খোকন সরকারের নিকট পাঠায়। তারা মুরাদনগর উপজেলার লালন মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নজরুল ইসলাম, মোঃ সোহাগ চোরাই মোটর সাইকেলগুলো হাত বদলের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রয় করে আসছিল।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, দেবিদ্বার এলাকা থেকে গত কয়েক মাসে অন্ততঃ ১৫টি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে। কিন্তু এসব চুরির ঘটনার কোন ক্লু এতদিন খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বিভিন্ন এলাকায় সোর্স লাগিয়ে অবশেষে আন্তঃজেলা মোটর সাইকেল চোরাই সিন্ডিকেট’র ৭ সদস্যের পুরো দলটির সন্ধান পেলে কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় অভিযান চালিয়ে আন্তজেলা মোটর সাইকেল চোরাই সিন্ডিকেট’র ৫সদস্যকে আটক করতে পারলেও সিন্ডিকেট’র মূল হোতা আল- আমিন ও তার ভাইগ্নাকে আটক করতে পারিনাই। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের পূর্বক ৭দিনের রিমান্ড আবেদন চেয়ে তাদের কুমিল্লা কোর্ট হাজতে চালান করা হয়েছে।
