প্রতীক ওমর, বগুড়া: বগুড়ায় বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যহত আছে। গত কয়েক দিনের বন্যা পরিস্থিতি বয়াবহরুপ ধারণ করেঠে। বগুড়ার যমুনা নদীর পানি ধুনট ও সারিয়াকান্দি পয়েন্টে বিপদ সীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল,চালুয়াবাড়ী, চন্দনবাইশা, কামালপুর , কুতুবপুর, হাটশেরপুর ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ২ হাজার ৫ শত পরিবারের ২০ হাজার ৫শত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্যায় ২২৭৫ হেক্টর জমির আউশ, ১৫৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, বীজতলা, সবজি ৩০ হেক্টর, বন্যায় ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদিকে, ধুনট উপজেলার ভান্ডার বাড়ী ইউনিয়নের যমুনার চরের প্রায় ১৩টি গ্রামের নিচু এলাকা ডুবে প্রায় ২হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। সেই সাথে ক্ষতি হয়েছে জমির ফসল। পানি উন্নয়ন বোডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন নতুন করে পানি বৃদ্ধির ফলে জনগনের দূভোগ চরমে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে কুতুবপুরের ধলির কান্দি থেকে কামালপুরের টিটুর মোড় পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকি পূর্ন হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে চন্দন বাইশা আদবাড়িয়া স্কুলের নিকট থেকে রৌহাদহ বাজার পর্যন্ত ১২শ’মিটার বাঁধ অধিক ঝুকি পূর্ণ ধরা হয়েছে। অধিক ঝুকিপূর্ণ বাঁধের ইতোমধ্যে ৫টি স্থানে ৩০০মিটার ধসে গেছে। সেসব স্থানে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মান করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ও বিকল্প রিং বাঁধ ভেঙে যাতে যমুনা পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য ২য় ধাপে আরো একটি ১৩শ মিটার বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।
এদিকে আকষ্যিক পানি বৃদ্ধিতে ধুনট উপজেলার ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলো হলো বৈশাখী, বথুয়ারভিটা, রাধানগর, শহড়াবাড়ী, শিমুলবাড়ী, কৈয়াগাড়ী, বানিয়াজান, কচুগাড়ী, নিউসারিয়াকান্দি, রঘুনাথপুর, ভুতবাড়ী, পুকুরিয়া ও আটাচর। এসব গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত লোকজন গবাদি পশু ও মালামাল সরিয়ে নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিয়ে দুঃখ কষ্টে দিনযাপন করছে। অনেক পরিবার আবার পানিবন্দি ঘরের মধ্যেই বাঁশের চাটাই তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। সেখানে জ্বালানী, খাদ্য, বস্ত্র ও খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যায় কৃষকের রোপা আমন ধান, পাট, ভুট্রা সহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া বৈশাখী, রাঁধানগন, শহড়াবাড়ী, কৈগাড়ী ও শিমুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ওই সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। বানিয়াজান স্পারের ৫০ মিটার ট্রাকচার ধসে যাওয়ার পর পুরো স্পারটি এখন হুমকির সম্মূখিন হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দিন ও রাত কাটছে ভাঙ্গন আতঙ্কে। এখন পর্যন্ত কোন ত্রান সহায়তা পায়নি বানভাসিরা।
