ads

বৃহস্পতিবার , ২১ আগস্ট ২০১৪ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

আজ ভয়াল-বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
আগস্ট ২১, ২০১৪ ১:২৯ পূর্বাহ্ণ

21 Agustশ্যামলবাংলা ডেস্ক : আজ সেই ভয়াল বিভীষিকাময় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট। বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের দিন। মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার দশম বার্ষিকী। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতায় থাকাকালে সভ্যজগতের অকল্পনীয় এক নারকীয় হত্যাকা- চালানো হয় ২০০৪ সালের এই দিনে। গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাসে আক্রান্ত হয় মানবতা। রক্ত-ঝড়ের প্রচ-তায় মলিন হয়ে গিয়েছিল বাংলা ও বাঙালীর মুখ। জীবন্ত বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ এদিন মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ঊনত্রিশ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে আবারও ঘাতকের দল এই আগস্টেই জোট বেঁধেছিল। শোকাবহ রক্তাক্ত আগস্ট মাসেই আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর টার্গেট থেকে ঘাতক হায়েনার দল গ্রেনেড দিয়ে রক্তস্রোতের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সমাবেশস্থলে। টার্গেট ছিল এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণ নেতৃত্ব শূন্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতেই ঘাতকরা চালায় এই দানবীয় হত্যাযজ্ঞ।
ওই সময় সরকারে ছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি) ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। ওই ঘটনার পর জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে ঘটনাটিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই দফা তদন্তে বেরিয়ে আসে ঘটনার আদ্যপান্ত। প্রমাণিত হয় ষড়যন্ত্রের নীলনকশা। মামলার অভিযোগপত্রে নাম আসে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীসহ অনেকের। ঐতিহাসিক এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ। প্রথম দফা চার্জশিটে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম এলেও কিছু ঘটনা অজানা ছিল। সম্পূরক চার্জশিটে বেরিয়ে আসে গ্রেনেডের উৎস, পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারীদের নাম।
মামলার তদন্ত : ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর মতিঝিল থানার এসআই ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আবদুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মোট ৬ জন তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে। তদন্তের শুরুতে আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা ইন্টারপোল ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর সহায়তা নেয়া হয়। গ্রেনেড হামলার আট দিন পর ২০০৪ সালের ২৯ আগস্ট ইন্টারপোলের দুই কর্মকর্তা মিস জ্যাকুলিন ও জেফ্রি আইলস ঢাকায় আসেন। একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর আসেন ইন্টারপোলের কর্মকর্তা এইচ ডব্লিউ সিন, মারাস ভুসিনাস ও উইসন গিবসন। ইন্টারপোল ছাড়াও এসেছিলেন এফবিআই সদস্যরা। ওই সময় এফবিআই সদস্যরা কিছু আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। পরে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সে আলামত ফিরিয়ে দেয় এফবিআই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেনেড হামলার মোট তিন দফা তদন্ত হয়েছে। ২০০৪ সালে ঘটনার পর প্রথম হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে। কিন্তু ওই সময় তদন্ত শুরু হলেও কোনো প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। বরং ওই সময় তদন্ত কর্মকর্তারা মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করেন। সাজানোর চেষ্টা করেন জজ মিয়া নাটক। ওই ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। দ্বিতীয় দফার ওই তদন্তের পর ২০০৮ সালের ১১ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
প্রথম চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সী ওরফে আবুল কালাম ওরফে আবদুল মান্নান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, শাহাদৎউল্লাহ ওরফে জুয়েল, হোসাইন আহমেদ তামিম, মঈন্ উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জানদাল, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ, উজ্জ্বল ওরফে রতন, মোঃ তাজউদ্দিন, মোঃ খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মোঃ ইকবাল, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিছুল মুরসালিন, আবুবকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার ও মাওলানা লিটন।
তবে ওই তদন্তে গ্রেনেডের উৎস ও হামলার পরিকল্পনার নেপথ্যে কারা জড়িত তা উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। পরে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে সিআইডি পুনঃতদন্ত শুরু করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি ২০১১ সালের ৩ জুলাই আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে। এতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু এবং সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ৩০ জনকে আসামি করে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়ার পর মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২।
সম্পূরক চার্জশিটে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা হলেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বকস, ডিএমপির তৎকালীন উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, হুজির আমীর মাওলানা শেখ ফরিদ, নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মাওলানা আবদুর রউফ, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (বরখাস্ত), বিএনপির ঢাকা মহানগর নেতা আরিফুর রহমান, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ, সিআইডির সাবেক এসপি রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, হানিফ পরিবহনের মালিক মোঃ হানিফ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, বাবু ওরফে রাতুল বাবু, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন। অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর ২০১২ সালের ১৯ মার্চ হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
দুটি মামলায় ৫২ আসামির মধ্যে গ্রেফতারের পর বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন জোট সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানসহ মোট ২৫ জন। অন্যদিকে এ মামলায় পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শক আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বকসসহ আটজন বর্তমানে জামিনে আছেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, মাওলানা তাজউদ্দিনসহ মোট ১৯ জন।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!