এসএম আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা (খুলনা) : খুলনার পাইকগাছার নদ-নদীতে পূর্ণীমার জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেঁড়ী বাঁধ উপচে পৌর বাজারসহ বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্লাবিত হয়ে ওয়াপদার বাইরের ছোট ছোট অনেক চিংড়ী ঘেরের মাছ ভেসে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঝুকিপূর্ণ বাঁধ ভেঙ্গে দেলুটি, সোলাদানা, লস্করসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তৃর্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশংকা করছে এলাকাবাসী। অজানা আশংকায় এসব এলাকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
জানাগেছে, পূর্ণীমার (সুপার মুনের প্রভাবে) গত দু’দিন যাবৎ উপজেলার শিবসা, কপোতাক্ষ, কুড়–লিয়া, হাড়িয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে শহর রক্ষা বাঁধ না থাকায় নদীর উপচে পড়া পানিতে পৌর বাজারের কাঁকড়া মার্কেট, কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, সবজি বাজার, মাংস বাজার, চিংড়ী বিপনন মার্কেট, পৌর বাজারের অধিকাংশ এলাকার প্লাবিত হয়ে হাঁটু পানি জমে ব্যবসা-বানিজ্যসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়। অপরদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হয় বলে খবর পাওয়া যায়। চাঁদখালী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুনছুর আলী গাজী জানান-কপোতাক্ষের উপচে পড়া পানিতে ইউনিয়নের চককাওয়ালী গুচ্ছ গ্রাম প্লাবিত হয়, লতার কৃষ্ণ রায় জানান-কাঠামারী এলাকার ওয়াপদার বাইরের ছোট ছোট চিংড়ী ঘের তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পোল্ডারের ওয়াপদার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করায় যেকোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তৃর্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে স্থানীয়রা আশংকা করছে। দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান সমর কান্তি হালদার জানান-দারুনমল্লিক স্লুইচ গেটের পূর্ব পাশে ওয়াপদার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মেরামতের চেষ্ঠা করলেও যেকোন মুহুর্তে বাঁধটি ভেঙ্গে ২২ নং পোল্ডারের বিস্তৃর্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক ও ইউপি সদস্য পরিতোষ হালদার জানান- নুনিয়াপাড়া এলাকার বাঁধ উপচে কড়–লিয়া নদীর অতিরিক্ত পানি পোল্ডার অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এছাড়াও সোনাখালী থেকে আমুরকাটা অভিমুখে ওয়াপদার বাঁধ ঝুুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান বাইনতলা স্লুইচ গেইট, কড়–লিয়া ও আলমতলা মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর ঘের সংলগ্ন ওয়াপদার বাঁধ মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন আগেও স্বেচ্ছ¤্রমের ভিত্তিতে বাঁধটি মেরামত করলেও বর্তমানে নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় যেকোন মুহুর্তে এসব এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে ইউনিয়নের বিস্তৃর্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে এমন আশংকায় এলাকার লোকজন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বলে তিনি জানান। পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান-ফ্লাড ওয়াল (শহর রক্ষা বাঁধ) না থাকার কারনে প্রতিনিয়ত পৌর বাজার নদীর উপচে পড়া পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হলেও তাদের উদাসিনতার কারনে ফ্লাডওয়াল নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

পাইকগাছায় ভ্রাম্যমান আদালতে ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা
খুলনার পাইকগাছায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে ৬ ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগরে অভিযান চালিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও লাইেেসন্সবিহীন ডিপোতে চিংড়ী মাছ ক্রয়-বিক্রয়ের অপরাধে চিংড়ী ব্যবসায়ী আবু বক্করকে ৪ হাজার এবং লতা ইউনিয়নের শামুকপোতা বাজারে অভিযান চালিয়ে নিরাপদ মন্ডল ১০ হাজার, নারায়ন চন্দ্র সরকার ১০ হাজার, কেয়া ফিসের বেগম ছখিনা খানম ১৫ হাজার, যমুনা ফিসের আব্দুল মজিদ মোড়ল ১০ হাজার ও জয় ফিসের প্রাণকৃষ্ণ মন্ডলের নিকট থেকে ৫ হাজারসহ সর্বমোট ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। আদালত পরিচালনাকালে অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এসএমএ রাসেল, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এসএম শহীদুল্লাহ ও ক্ষেত্র সহকারী সুজিত রঞ্জন মন্ডল।
