অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) : মধ্যযুগীয় স্বনামধন্য খ্যাতনামা কবি বিজয় গুপ্ত প্রতিষ্ঠিত মনসা মন্দির বর্তমানে ভ্রমণ পিপাসুদের দর্শণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যেই দর্শণার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে মন্দির প্রাঙ্গন। ১ মে.টন ওজনের ¯¦র্ণাভ পিতলের মনসা মূর্তি ও মন্দিরের শৈল্পিক কারুকাজ দর্শণার্থীসহ সকলকে মুগ্ধ করছে। মন্দিরের পাশে অবস্থিত বিশাল দীঘিতে ভ্রমণ পিপাসুদের অতিরিক্ত আনন্দ দিতে আধুনিক ফাইবার বোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে আধুনিক সাজে নবনির্মিত মনসা মন্দিরটি দেখতে দেশের যেকোন স্থান থেকে আসতে হলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীতে নেমে ৫কি.মি পশ্চিমে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলায় আসতে হবে। ঋতুশূণ্য বেদ শশী অর্থাৎ ১৪০৬ বঙ্গাব্দ সুলতান হোসেন শাহ্’র শাসনামলে সাড়ে পাঁচশ বছর পূর্বে কবি বিজয় গুপ্ত স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ১ মে.টন ওজনের ¯¦র্ণাভ পিতল দ্বারা নতুন মনসা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট নবরূপে মনসা মন্দিরটি পুন:প্রতিষ্ঠার পর উদ্বোধন করা হয়। মন্দিরের সামনে নাটমন্দিরটির পুণ:নির্মাণ কাজ জেলা পরিষদের অর্থায়নে শীঘ্রই শুরু করা হবে। মন্দিরের সামনে এলজিইডির অর্থায়নে নতুন রাস্তা নির্মিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের জন্য মন্দির আঙ্গিনার পাশে বিশাল দীঘিতে পার্শ্ববর্তী নাঠৈ গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান দিনু একটি ফাইবার বোট প্রদান করেছেন। বোটটিতে ভ্রমণ পিপাসুরা ১০ টাকার বিনিময়ে চড়ে সমস্ত দীঘিতে ভ্রমণ করতে পারবেন। দীঘির চারপাশে ভ্রমণ পিপাসু ও দর্শণার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ও পাকা সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ২৬ থেকে ২৮ শ্রাবণ (১২-১৪ আগস্ট) তিনদিন ব্যাপী বাৎসরিক রয়ানী গান শেষে ৩১ শ্রাবণ ( ১৭ আগস্ট) ঐতিহ্যবাহী মনসা পূজা অনুষ্টিত হবে। পূজায় অর্ধশতাধিক বলিদান ও সারাদিন ভক্তদের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা থাকবে। এবছর মনসা পূজায় কবি আসাদ চৌধুরীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। পূজা উপলক্ষে এ মন্দির আঙ্গিনায় উপমহাদেশের ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার ভক্তবৃন্দের সমাগম ঘটে। মন্দিরের উন্নয়ন ও পূজা পরিচালনার জন্য কবি বিজয় গুপ্ত স্মৃতি রক্ষা, মনসা মন্দির সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কমিটির ৩৫ জন সদস্য রয়েছেন। এব্যাপারে মন্দির কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ শংকর লাল বাড়ৈ বলেন, ইতিমধ্যে মনসা মঙ্গল কাব্য রচয়িতা ও মধ্যযুগীয় প্রখ্যাত কবি বিজয় গুপ্ত প্রতিষ্ঠিত মনসা মন্দিরটি বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। মন্দিরে ১ মে.টন ওজনের ¯¦র্ণাভ পিতল দ্বারা নির্মিত মনসা মূর্তি ও মন্দিরের শৈল্পিক কারুকাজ দর্শণার্থীদের মুগ্ধ করেছে।
