প্রতীক ওমর, বগুড়া : যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে সিরাজগঞ্জ থেকে কুড়িগ্রাম তিস্তা নদী পর্যন্ত ১৪৬ কিলোমিটার বাঁধের উপর ও মহাসড়ক নির্মানের নকশা চুড়ান্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা সেতু থেকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি,গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ হয়ে চিলমারী-কুড়িগ্রামের তিস্তা নদী পর্যন্ত ১৪৬ কিলোমিটার বাঁধ ও সড়ক নির্মাণ করা হবে। রিভার ব্যাংক ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের (আরবিআইপি) প্রকল্প পরিচালক সরদার সিরাজুল হক এ তথ্য দিয়েছেন।

প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভ্যবতা যাচাই শেষে প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে মহাসড়ক নির্মাণের জন্য ঘরবাড়ি সরানোর চিহ্নিতকরণ চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিরাজগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্রশীল জানিয়েছেন, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে বৃদ্ধি পেয়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ৮ হাজার কোটি টাকা। তিনি জানান, এ প্রকল্পের আওতায় যমুনা সেতু থেকে কুড়িগ্রাম তিস্তা পর্যন্ত বাঁধের ওপর দিয়ে নির্মিত মহাসড়কে কুড়িগ্রামে যমুনার পাড়ে ৩৬ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ, যমুনার পাড়ে ৫০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ কাজ, নির্মিত নদী সংরক্ষণ কাজের ৩৩.৫ কিলোমিটার মজবুতকরণ, ৪৪টি রেগুলেটর নির্মাণ এবং তিস্তার উপর একটি সেতু নির্মাণ করা হবে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরকার জানান, বাঁধের গতিপথে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, ধর্মীয় স্থাপনা, কবরস্থান, শ্মশান এড়িয়ে চলে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রথমে বাঁধ পুনর্নিমানের কাজ হবে ।
প্রকল্পের পরিকল্পনা রিপোর্টে বলা হয়েছে নতুন বাঁধের স্থান নির্ধারণে যতদূর সম্ভব পুরনো বাঁধের গতিপথ অনুসরণ করা হবে। একই সাথে বাঁধের গতিপথ অরক্ষিত নদী তীর থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধকে ৪০০ মিটার দূরত্বে রাখা হবে। এই বাঁধের উপর ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে গাড়ী চলার উপযোগী করে মহাসড়ক নির্মাণ করা হবে। সংরক্ষিত নদী তীর থেকে বাঁধ ও সড়ক ১০০ মিটার দূরত্বে অবস্থান করবে।
১৪৬ কি.মি বাঁধের উপর সড়ক নির্মান হলে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ,বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম অঞ্চলের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত রচনা হবে। সেই সাথে যমুনার ভাঙন কিছুটা কমবে। যমুনা পাড় ও চরের মানুষের জন্য এই সড়ক ব্যবস্থা হবে সবচেয়ে উপযোগী।
