এম.আবদুল্লাহ আনসারী, পেকুয়া (কক্সবাজার) : পেকুয়ার টইটং এ দুটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধসহ ৯ জন আহত হয়েছে।
জানাযায়, ১৯জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে টইটং হাজীবাজারের উত্তর পাশে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে সন্ত্রাসীরা বুন্দুক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আঞ্চলিক মহা সড়ক হয়ে দক্ষিণ দিক থেকে ৩টি সি.এন.জি করে দা বাহিনীর নাছিরের নেতৃত্বে কয়েকজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী টইটং বাজারের দিকে যাওয়ার পথে বোরকা পরিহিত কয়েকজন অস্ত্রধারী লোক তাদের আটক করে গুলি বর্ষণ করে সি.এন.জির গতিরোধ করে হামলা শুরু করে। এসময় দা বাহিনীর নাছির পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেও অপর দুটি সি.এন.জির গতিরোধ করে তাদের ব্যাপক মারধর করে। কিছুক্ষণ পর নাছির পাল্টা গুলিবর্ষণ করে বোরকা পরিহিত সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করে তার বাহিনীর লোকজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এসময় দা বাহিনীর ৪জন গুলিবিদ্দ ও দায়ের কোপে আঘাতপ্রাপ্ত হয় ৪জন। এদিকে দা বাহিনীর পাল্টা আক্রমনে বোরকাপরিহিত এক সন্ত্রাসী আহত হয়। দু সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে প্রায় ৪৫মিনিট ব্যাপী বন্দুক যুদ্ধ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। দা বাহিনীর সদস্যদের চিনতে পারলেও বোরকা বাহিনী নামে আত্মপ্রকাশ করা এ বাহিনীর কোন সদস্যকে কেউ চিনতে পারেনি। দা বাহিনীর সদস্যরা সংগঠিত হলে ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে বোরকা বাহিনীর সদস্যরা বনকাননের দিকে চলে যায়। আহতরা হলো দা বাহিনীর সক্রিয় ক্যাডার নুরুল কবির(৩৩), জয়নাল ্উদ্দিন জইল্যা(২৮), পারভেজ(২৪), সালেক(৩৮), মালেক(৩৫), নাছির প্রকাশ ছোট নাছির(৩৮), মিজান(সি.এন.জি চালক), আছু(সি.এন.জি চালক)। বোরকা পরিহিত ১জন সন্ত্রাসী দায়ের কোপে আহত হলেও তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। জানাযায় সম্প্রতি দা বাহিনীর মধ্যে বটতলী খুইন্যা বিটা এলাকা কেন্দ্রিক একটি গ্রুপ দলছুট হয়ে যায়। দুসাপ্তাহ ধরে বোরকা পরিহিত একটি সন্ত্রাসী বাহিনী কয়েকদফা দা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে। খুইন্যা বিটা এলাকায় দা বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার আমিরুল কবির মলিঙ্গা সহ ৩জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এরপর টইটং বাজারেও কয়েকদফা হামলার ঘোষনা দেয়ায় দা বাহিনীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ১৯জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রয়াত আ.লীগ সভাপতি ছাদেকুর রহমানের মৃত’্য বার্ষিকী থেকে ফেরার পথে সশস্ত্র হামলা করে ৮জনকে আহত করে। এব্যাপারে পেকুয়া থানার এস.আই রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ৪জন গুলিবিদ্দ সহ ৮জনকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। কারা হামলা করেছে কেন হামলা করেছে তার কিছুই এখনো জানা যায়নি বলেও তিনি জানান।
পেকুয়া থানার ওসির বদলী গুঞ্জণ!
পেকুয়া থানার ওসি (প্রশাসন) হাবিবুর রহমানের বদলী হওয়া নিয়ে নানা গুঞ্জণ শুনাযাচ্ছে। ১মাস পূর্বে একবার বদলী হয়ে ৫দিনের মাথায় সে বদলী আদেশ স্থগিত করে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার পর তার বিরুদ্ধে পেকুয়ায় নারী কেলেংকারী ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তার অপসারণ দাবীতে ঝাড়– মিছিল করে স্থানীয় লোকজন। এরপর তার বিরুদ্ধে পেকুয়া সদরের ছৈরভাঙ্গার মৃত নুর আহমদের স্ত্রী মুরতাজা বেগম বুছুইক্কানী বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন স্পেশাল ট্রাইব্যূনালে ১৪জুলাই ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ৭কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদের নির্দেশ দেন আদালত। ১৬জুলাই কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করেন মগনামা ইউনিয়নের মঠকা ভাংগা এলাকার মুজাফ্ফর আহমদের ছেলে আব্বাছ উদ্দিন। যার মামলা নং ২৪/২০১৪ ধারা ১৬১, ১৬২, ১৬৫, ও দূনীর্তি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২)। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দূনীর্তি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া নির্দেশ প্রদান করেন। পেকুয়ার সচেতন মহলের অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে একটি গ্রুপকে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা করে তিনি সরকারী দলেরও রোষানলের শিকার হন। এছাড়া বিচার প্রার্থী ও তার অধীনস্থ অফিসারদের সাথে অসংলগ্ন দূর্ব্যবহার, সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের মাধ্যমে ও রাজনৈতিক চরিত্রহীন ব্যক্তিদের মাধ্যমে পুরো পেকুয়ায় ব্যাপক মামলা বাণিজ্য করে বিতর্কিত হয়ে পড়েন ওসি হাবিব। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী সহ অসামাজিক অপকর্ম চিহ্নিত অপরাধীদের সাথে থানা কম্পাউন্ডে আড্ডা দেয়া সহ বিভিন্ন বদনাম চাউর হলে সরকারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করে। পরিশেষে আবারো তার বদলী আদেশ এসেছে তিনি চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ব্যাপক গুঞ্জণ সৃষ্টি হয়। এদিকে ওসির বদলী হয়েছে আজ বা কাল চলে যাবে সে জন্য দালাল চক্র মামলার আসামী ও বাদীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে মামলার কেউ ফাইনাল কেউ সার্জশীট থেকে নাম বাদ নেয়ার শেষ চেষ্ঠায় মেতে ওঠেছে বলে জানাগেছে। এব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পেকুয়া থানায় কর্মরত অফিসার এপ্রতিবেদককে বলেন, ওসিকে বদলী করা হয়নি তিনি নিজ থেকেই বদলী হয়ে চলে যাচ্ছেন। তবে এখনো আদেশের কাগজ পত্র থানায় পৌছেনি। কদিন পূর্বে বদলী ঠেকিয়ে পেকুয়া চৌমুহনীতে প্রকাশ্যে বলছিল তিনি এখনো বদলী হননি আবার পেকুয়ায় ফিরেছি তাহলে এখন নিজ থেকে কেন বদলী নিয়ে চলে যাচ্ছেন এমনটা জিজ্ঞেস করলে তারা কোন প্রকার মন্তব্য করেননি। এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কাগজপত্র পায়নি বলে বলতে পারছিনা তার বদলী হয়েছে তবে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার তদন্ত চলছে সেটিই নিশ্চিত।