নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের বিস্তীর্ণ পাহাড়ী এলাকায় থেমে নেই বন্যহাতির তান্ডব। প্রায় প্রতিনিয়তই সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার পাহাড়ী এলাকায় ওই তান্ডব চলছে। এবার বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে বনবিভাগের অফিস, মাটির বসতঘরসহ আসবাবপত্র লন্ডভন্ড করে ফেলেছে। ১৬ জুলাই বুধবার উপজেলার মায়াঘাষী গ্রামের সীমান্ত সড়কের উত্তর অংশে গোপালপুর বনবিট অফিস ও এর আশেপাশের এলাকায় ওই তান্ডবের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় স্থানীয় ইউনুছ আলী, হযরত আলী, লাল মিয়া, শাহা আলম, গারো আদিবাসী জীবেন দাওয়া ও স্বপন দাওয়া আহত হয়েছেন।

জানা যায়, গত দুই মাস ধরে বিরতিহীনভাবে প্রায় প্রতিদিনই ১শর মতো বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে এসে উপজেলার ভোগাই নদীর পূর্ব পাড়ে কালাকুমা, পানিহাতা, পেকামারী, মায়াঘাসী, গোপালপুর, বারঘড়িয়া গ্রামগুলোতে তান্ডব চালাচ্ছে। হাতির ওই তান্ডবে রমজান মাসে রাত জেগে থাকা সীমান্তে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। টর্চ লাইট, মশাল, পাটকেল এসব কিছুতেই এখন আর বন্যহাতি ভয় পায় না। বরং এসব দেখে তাদের আক্রমনের ইচ্ছা আরও প্রবল হয়। এদের আক্রমনে মানুষ জীবন বাঁচাতে দিগি¦দিক ছুটাছুটি করে ও পড়ে গিয়ে আহত হয়। আবার কেউ কেউ মারাও যাচ্ছে। বুধবার মায়াঘাসী এবং গোপালপুর বনবিটের ফরেষ্ট অফিসের ২টি বিল্ডিংয়ের ৩টি রুমের দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র ভেঙ্গে লন্ডভন্ড করে ফেলেছে। অপরদিকে তার কিছু উত্তরে আরেকটি পরিত্যাক্ত বিল্ডিংয়েও আক্রমণ চালায় বন্যহাতির দল।
এদিকে কিছু দিন আগে ওই বনবিটে বন্যহাতির ১টি শাবক কুয়াতে পড়ে মারা যায়। এখন ওই শাবকের শোকে বন্যহাতির দল প্রায় প্রতিদিনই প্রতিশোধ নিতে এলাকায় এসে ভাংচুর করে আসছে বলে এলাকাবাসী জানায়। ঝড়ো হাওয়ায় বনের ভেতর সেগুন গাছের বাতাসে মর্মর শব্দ আর বন্যহাতির মাটি কাপানো গুড় গুড় শব্দে এলাকায় ভয় ও আতংক বিরাজ করছে।
গোপালপুর বিটের বনপ্রহরী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বনে ফলজ গাছের কমতি থাকায় লোকালয়ে খাবার সংগ্রহের জন্য এসে বন্যহাতির দল আমাদের অফিস ও এলাকার মানুষজনের বাড়ীঘরে আক্রমন চালাচ্ছে। স্থানীয় আবুল মাষ্টার ও শাহজাহান বলেন, একমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেই হাতি ভয় পাবে। এইভাবে বন্যহাতি আক্রমন চালালে বাঁচার তাগিদেই মানুষ-বন্যহাতি মুখোমুখি অবস্থান নেবে।
