রাজশাহী প্রতিনিধি : ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ দুই নেতার মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন আরেকজনকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। ১৫ জুলাই মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মাদার বখশ হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন রাবি ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক ও বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক আহমেদ ফোন করে সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিককে মাদার বখশ হলের সামনে আসতে বলে। আতিক মোটরসাইকেল যোগে হলের সামনে আসলে কৌশিকের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে কৌশিক লোহার রড দিয়ে আতিকের মাথায় আঘাত করলে আতিকও তার কাছে থাকা চাপাতি দিয়ে কৌশিকের পিঠে কোপ দেয়। এসময় পুলিশ এসে কৌশিককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আতিককে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র নিয়ে ভর্তি করে। উভয়ই আশংকামুক্ত বলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন বলেন, দুই নেতার মধ্যে মারামারির বিষয়টি শুনেছি। তবে কি নিয়ে মারামারি হয়েছে তা জানা যায়নি।
মতিহার থনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ব্যাক্তিগত দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের দুই নেতার মধ্যে মারামারি হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি চাপাতি ও লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাবিতে ইফতারের নামে থামছে না ছাত্রলীগের ‘চাঁদাবাজি’!
রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলে থামছে না ছাত্রলীগের ইফতারের নামে চাঁদাবাজি। পবিত্র রমজানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ইফতার করার অজুহাতে তাদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েটি আবাসিক হলে ছাত্রলীগের আয়োজনে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক এ চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের এমন কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে ছাত্রলীগ সভাপতি বলছে সকল হল শাখাকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইফতার বাবদ টাকা নিতে নিষেধ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩ জুলাই স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন ‘বাঁধন’ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় মাদার বখ্শ হলে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে চাঁদা তুলে। এদিন রাতে চাঁদা তুলার দায়ে বাঁধন কর্মীদের বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
হল সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হল শাখা ছাত্রলীগের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই ইফতারকে কেন্দ্র করে হলের প্রত্যেক ছাত্রের কাছ থেকে ৬০ হারে চাঁদা আদায় করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর আগে গত ১২ জুলাই শহীদ হবিবুর রহমান হলের ইফতারকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একই ভাবে মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগ আজ বুধবার অনুষ্ঠিতব্য ইফতারকে কেন্দ্র করে ওই হলের প্রত্যেক ছাত্রের কাছ থেকে ৫০টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে।
ছাত্রলীগকর্মীরা হলের প্রতিটি কক্ষে গিয়ে নিজেকে ছাত্রলীগকর্মী পরিচয় দিয়ে প্রথমে ওই কক্ষের বাসিন্দাদের নাম লিখছে পরে ইফতার বাবদ ৫০টাকা চাঁদা দাবি করছে। কোন শিক্ষার্থী চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাসিক কয়েকজন ছাত্র জানায়, রাত ১১টা পরে ছাত্রলীগ কর্মীরা হলের রুমে রুমে গিয়ে ইফতারের কথা বলে জনপ্রতি ৫০টাকা আদায় করছে। কেউ টাকা দিতে আস্বীকৃতি জানালে তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। তাই অনেকেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন, ইফতার বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন টাকা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারন শিক্ষাথীরা আমাদের অতিথি হিসেবে থাকবে। এর পরও যদি কেও টাকা আদায় করে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় মাদার বখশ্ হলের প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর মো: শেরেজ্জামান বলেন, ছাত্রলীগ হলে ইফতার পার্টি দিবে এটা জানি। তবে তারা যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে সেটা আমার জানা নেই। কারণ এখন পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী টাকা আদায়ের ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেনি।