মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) : লেবুচাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন শেরপুরের নকলা উপজেলার কলেজছাত্র এসএম মনিরুজ্জামান।

উপজেলার ভূরদীর ছাইদুল হকের তৃতীয় পুত্র শিক্ষক মোঃ মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই শেরপুর সরকারী কলেজের বিবিএস শাখার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এসএম মনিরুজ্জামান মনস্থির করেন শুধু পড়ালেখা করলেই চলবে না, পাশাপাশি কিছু একটা করা উচিত। তার বড় দুই ভাই মোঃ মোশারফ হোসেন ও মোঃ মোতার হোসেন শেরপুর যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে লেবু ও অন্যান্য ফলজ বাগান করা শুরু করলেও তাদের চাকুরী হয়ে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। তাদের ছোট ভাই মনির ভাবলেন বড় দুই ভাইয়ের ইচ্ছা পূরণ করবেন। এই সংকল্পকে সামনে রেখে বড় ভাইদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তিনিও শেরপুর যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রথমে মাছ চাষ ও গাভী পালন শুরু করেন, তাতে সুবিধা করতে না পেরে লেবু ও ফলজ বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি বাড়ীর আঙ্গিনার পতিত জমিতে প্রথমে পরীক্ষামূলক ভাবে বিভিন্ন জাতের ৩০টি লেবু গাছ রোপন করেন। পরবর্তী ২ বছরের মধ্যেই লেবু বাজারজাত করার উপযোগি হলে আর্থিক লাভবান হওয়ায় মনির আরও বেশি পতিত জমিতে লেবু ও অন্যান্য ফলজ বাগানের পরিকল্পনা হাতে নেন এবং ২৫শতাংশ জমিতে লেবু গাছ এবং ৩০ শতাংশ জমিতে ফলজ গাছ লাগান। ফলদ বাগান থেকে এখন পর্যন্ত লাভের মুখ না দেখলেও লেবুর বাগান থেকে তিনি প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকার মুনাফা পাচ্ছেন। পতিত জমিতে লেবু সহ বিভিন্ন ফল চাষে মনিরের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই তার পথ অনুসরণ করে লেবু ও ফলদ বাগান করা শুরু করেছেন। লেবু চাষ ও ফলদ বাগান করে ভাগ্য পরিবর্তনের বিষয়ে মনিরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন- আগে আমাকে এ বিষয়ে অনেকেই নিরুৎসাহিত করলেও এখন এলাকার কৃষক মকুল, ছামিদুল, মালেক, আবেদ আলী, ছাত্র জব্দুল, বাবু, ফটিক, শাহিন, টুটুল, জাকির হোসেন বকুল, হেলাল, সাধু ও কাওছারের মত শতাধিক কৃষক ও ছাত্র সহ মরাকান্দা ফ্রেন্ডসীপ ক্লাবের ৪০জন সদস্যই লেবু ও ফলদ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এবং উত্তরোত্তর লেবু ও ফলজ বাগান বাড়ছে। চাষীরা বলছেন লেবু ও বিভিন্ন ফলজ চাষে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা ও সঠিক সময়ে পরামর্শ সহ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে ভাল ফলন তথা আত্মনির্ভরশীল হতে পারব ইনশাল্লাহ্। তাই এসএম মনিরুজ্জামান সহ এলাকার কৃষকরা পতিত জমিকে কৃষি উৎপাদনে কাজে লাগানোর জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন।
