নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে নিখোঁজের ৩ দিন পর ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়–য়া জাহিদ হোসেন (১২) নামে এক স্কুল ছাত্রের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বলরামপুর গ্রামের শরিফুল মোড়লের পুত্র ইসলামকাটি পার্ব্বতীনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র জাহিদ হোসেন সোমবার বেলা ১১ টার দিকে কপোতাক্ষ নদ সংলগ্ন খাল গেটে গোসল করতে যায়। বেলা ১টার দিকে জাহিদ বাড়ী না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে মহল্লার সবাই কপোতাক্ষ ঘাট সহ বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ীতে থাকা নিহতের ব্যবহৃত ফোনে ০১৯২৫৫৮১৭৯৭ নম্বর থেকে জানানো হয় লাশ তালা থানায় আছে। এ খবরে ওই রাতেই পরিবার এবং প্রতিবেশী লোকজন থানায় ছুটে যায়। সেখানে লাশের সন্ধ্যান না পেয়ে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে নিহতের পিতা শরিফুল ইসলাম মোড়ল বাড়ী হতে প্রায় ১কি.মি দূরে মনিরুদ্দীনের পাটক্ষেতে নিহত জাহিদের ক্ষতবিক্ষত গলিত লাশ দেখতে পেয়ে চিত্কার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন চিত্কারের সূত্র ধরে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ সনাক্ত করে পুলিশে সংবাদ দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী ইসলামকাটি ও বলরামপুর গ্রামবাসীর মধ্যে খেলাকে কেন্দ্র করে কয়েকবার সংঘর্ষ হয়। এছাড়া ১০-১৫ দিন পূর্বে ইসলামকাটি গ্রামের মাহফুজ, লিটন সহ আরো ৭/৮ জনের সাথে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে বলরামপুর গ্রামের বাগান মালিক মহিরুদ্দীনের সাথে ঝগড়া হয়। চোরদের ধারণা জাহিদ চুরির ঘটনা ফাঁস করেছে। এরই সূত্র ধরে জাহিদকে বিভিন্ন সময় মারপিট সহ জীবন নাশের হুমকী দিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে সোমবার জাহিদ নিখোঁজ হয়। গতকাল সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে- নিহত জাহিদের ডান হাতের আঙ্গুল এবং পুরুষাঙ্গ কর্তন সহ শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া পাশে একটি প্লাস্টিকের কনটেইনার পড়ে থাকতে দেখা যায়। এলাকাবাসীর ধারণা হত্যাকারীরা জাহিদকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে হত্যার পর গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে বিকৃত করার চেষ্টা চালায়। ঘটনাস্থল থেকে তালা থানা পুলিশ লাশ করে উদ্ধার করে সুরৎহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে নিখোঁজের পর নিহতের পিতা একই গ্রামের আব্দুল গফফার মোড়ল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তালা থানায় সাধারন ডায়েরী করে। যার নম্বর – ২৫৬।
তালা থানা অফিসার ইনচার্জ আবু বক্কার সিদ্দিক জানান, তদন্ত করে হত্যাকান্ডের প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।