তাপস চন্দ্র সরকার, কুমিল্লা : ঈদ বাজারে তৎপরতা বাড়িয়েছে জাল টাকার কারবারীরা। বিভিন্ন তথ্যে দেখা গেছে, এখন ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বেশি জাল করছে প্রতারকরা। আর জাল টাকার এ বাণিজ্য চালাচ্ছে পুরনো কারবারীরাই। জাল টাকা তৈরি ও বাজারে ছাড়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও কার্যকর তদন্ত হয় না। এর আগে ‘দুর্বলতার’ কারণে জামিন পেয়েছেন অনেক জাল টাকার কারবারী। সাক্ষীর অভাবে আদালতে অনেক মামলার সুরাহাও হচ্ছে না। সূত্র জানায়, রমজানে পুলিশ এখন পর্যন্ত জাল টাকার কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। জাল টাকার চক্রটি কুমিল্লা মহানগরীতে প্রতিনিয়ত আনাগোনা বৃদ্ধি করছে বলেও জানা গেছে। তাদের বেশির ভাগই এখন জেল হাজতে। তবে যারা জামিনে ছাড়া পেয়েছেন এবং তাদেও চক্রের অপর সহযোগীদের ব্যাপারে নতুনভাবে খোঁজ নিচ্ছে গোয়েন্দারা। ইতোমধ্যেই ঈদ বাজারের জাল টাকার কারবার চালানোর তথ্য মিলেছে। সম্প্রতি কুমিল্লা মহানগরীর বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলোতে রমজান ও ঈদে প্রতারকদের তৎপরতা বেশি থাকবে বলে আশঙ্কা দোকানীদের। একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাজারে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি জাল নোট রয়েছে। এখন বেশি জাল হচ্ছে এক হাজার ও ৫০০ টাকার নোট। প্রতারক চক্র আগের তুলনায় জাল নোটের দাম বাড়িয়েছে। আগে প্রতি লাখ জাল টাকা বিক্রি হতো সাত থেকে ১০ হাজার টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায়।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি খোরশেদ আলম জানান- জাল টাকার বিরুদ্ধে নিয়মিত নজরদারি রয়েছে। ২০ রমজানের পরে কঠোর ভাবে মাঠে মানবে পুলিশ। ঈদ উপলক্ষে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। একই সঙ্গে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসা কারবারীদের সন্ধানে মাঠে নেমেছে পুলিশ। অতীতের রেকর্ড অনুযায়ী অর্ধশতাধিক পেশাদার জাল টাকার কারবারীর সন্ধান আছে কাছে; যাদের বেশিরভাগ গ্রেপ্তার হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযানের পাশাপাশি মার্কেটে জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন ব্যবহার এবং জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
এদিকে মনোহরগঞ্জে জাল টাকার নোটসহ জাকির হোসেন (২৭) নামে এক যুবককে আটক করেছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। গতকাল উপজেলার বিপুলাসার বাজার থেকে ওই যুবককে আটক করা হয়। জানা যায়, জাকির হোসেন ওইদিন সকালে বিপুলাসার বাজারে একটি ফল দোকান থেকে আম কিনে ৫০০ টাকার জাল নোট দিয়ে ওই ব্যবসায়িকে ঠকিয়ে অন্য একটি ক্রোকারিজ দোকানে গিয়ে মগ কিনে ৫০০ টাকার জাল নোট দিলে ওই ব্যবসায়ি জাল নোট চিনতে পেরে যুবককে আটক রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে যুবককে ধরে থানায় নিয়ে আসে। পরে এ ঘটনায় এসআই আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে জাকির হোসেনকে প্রধান, সোলায়মান ও আব্দুল করিম মাষ্টারকে আসামী করে জাল টাকা মামলা দায়ের করেন। আটক জাকির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাংবাদিকদের জানায় আব্দুল করিম মাষ্টার তাকে ওই জাল টাকার নোট দেয়। ওই যুবকের বাড়ী লাকসাম উপজেলার চুনাতি গ্রামে। তার পিতার আনোয়ার হোসেন।
এ বিষয় মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই সরকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায় আসামীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা : আটক ২
কুমিল্লায় কোতয়ালী মডেল থানায় ৮জনের নাম উল্লেখ আরও ৭ জনকে অজ্ঞাতসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৯ জুলাই বুধবার দুপুর কোতয়ালী মডেল থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মামলার ২ জন আটক থাকলেও বাকিরা পলাতক রয়েছে।
পুলিশ জানায়- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্বাস মঙ্গলবার রাত ১২টায় মুড়াপাড়া ঈদগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাকু, ধারালো ছুরি ও বিভিন্ন অস্ত্রসহ ২ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলো- বাগিচগাাঁও এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র আরমান (২৫) ও একই এলাকার জাকির মিয়ার পুত্র রাজিব (২৭)। এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পলাতক আসামীরা হলো-রাজিব, কালাম, জাকির, মোস্তফা, ইসমাইলসহ ১৩ জন পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোরশেদ আলম জানান- কুমিল্লা মহানগরীর ছিনতাইকারী নেই বললেই চলে। আর যারা আছে তারা মূল পেশাদারী ছিনতাইকারী নয়। তারা মাদক ও ইয়াবা সেবনকারী। মাদকের টাকা জোগার করতে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে পুলিশ যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।