প্রতীক ওমর, বগুড়া : বগুড়ার আলতাফনগর ও আদমদীঘি রেলওয়ে ষ্টেশনের প্লাটফর্ম পুনঃনির্মাণ প্রকল্পের প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ষ্টেশন এলাকার বাসিন্দারা উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদারককারী রেলওয়ের একজন প্রকৌশলী অনিয়মের আংশিক অভিযোগ স্বীকার করেছেন।

এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে (২০১৩-১৪) বগুড়া জেলার আদমদিঘি ও আলতাফনগর রেলওয়ে ষ্টেশনের প্লাট ফরম পূনঃনির্মাণ প্রকল্প গ্রহন করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রতিটির জন্য ২২লাখ টাকা হিসেবে মোট ৪৪ লাখ টাকা। পুনঃ নির্মাণ কাজে নতুন ইট ব্যবহারের কার্যাদেশ থাকলেও পুরাতন ইট তুলে সেটাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া কার্যাদেশ মোতাবেক সিমেন্ট ,বালু সহ অন্যান্য উন্নতমানের সামগ্রী ব্যবহার না করে নিু মানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকাবাসী এ কাজের প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারের লোকজন গালিগালাজ ও আক্রমনের চেষ্টা করে। এলাকাবাসী পুনঃনির্মিত প্লাট ফরম উত্তোলন করে তা তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য রেলওয়ের কর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
অনিয়ম প্রসঙ্গে রেলওয়ের বগুড়া উপ বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, কিছু পুরাতন আধলা (ভাঙ্গা) ইট কয়েকটি জয়েন্টে ব্যবহার করেছিল ঠিকাদারের লোকজন। আমরা দেখার পর তা সরানো হয়েছে। তিনি কিছু অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, প্রয়োজনীয় জনবল অভাবে আমরা সঠিকভাবে তদারকি করতে পারিনা। তাই আমাদের অনুপস্থিতিতে ঠিকাদারের লোকজন অনিয়ম করে।
জেলা প্রশাসক ও ইউএনও’র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি নিয়োগে কোটি টাকার দূর্নীতির অভিযোগ
বগুড়ার শাজাহানপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগে কোটি টাকার বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। একই অভিযোগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। উপজেলার জালশুকা গ্রামের মেহেদী হাসান রবিন বৃহস্পতিবার বগুড়ার ১ম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বগুড়ার জেলা প্রশাসক, শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ মোট ৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। এর আগে একই অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগসুত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে শাজাহানপুর উপজেলার ২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী পদে লোক নিয়োগের জন্য গত ১৬ মে’১৪ থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমান তার ড্রাইভারের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সকাল ১০টার আগে এবং বিকাল ৫টার পরে ইউএনও’র নিজের বাসায় আসতে বলেন। এতে প্রার্থী, শিক্ষক ও সভাপতি ইউএনও এর বাসায় আসতে থাকেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়োগকৃত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং প্রার্থীর মাধ্যমে ৩ লক্ষ হতে ৫ লক্ষ টাকা করে নিয়ে চাকুরী দেয়ার গ্যারান্টি দিয়েছেন। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে তার নিজের প্রার্থীর নাম তালিকায় পাঠানোর জন্য প্রধান শিক্ষককে চাপ সৃষ্টি করেছেন। এলাকায় গরীব মানুষ চাকুরী নিতে জমি বিক্রি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ৩-৫ লক্ষ টাকা করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে প্রায় ১ কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নজরে এলে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দপ্তরী কাম- প্রহরী নিয়োগ কমিটির উপদেষ্টা সরকার বাদলের কাছে দুর্নীতির কারণে দপ্তরী কাম-প্রহরী পদে নিয়োগ স্থগিতের আবেদন জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান অভিযোগটি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসককে গত বুধবার চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ প্রতিটি ইউনিয়নে তারা ১টি করে দপ্তরী কাম-প্রহরী পদ চেয়েছিলেন। আমি তাদেরকে বলেছি নিয়োগে কোন ভাগাভাগি চলবে না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উথাপন করেছেন।
