এম,লুত্ফর রহমান, নরসিংদী : জাতীয় মাছ ইলিশের ছড়াছড়ির দেশে এখন ইলিশ মাছের বড়ই কাহাত। পদ্মা, মেঘনা কোথাও এখন ইলিশ তেমন একটা ধরা পড়ছে না। অবাধে জাটকা নিধনের কারনে নদ-নদীগুলো এখন ইলিশ শূন্য হয়ে পড়েছে। বাজারে যা ও পাওয়া যাচ্ছে তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এখন বাজারে আমদানী হচ্ছে ৩শত থেকে বড়জোর ৬শত গ্রাম ওজনের ইলিশ। বড় আকারের ইলিশ বৈধ অবৈধ পথে চলে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। বাংলাদেশের বাঙালীরা বড় আকারের ইলিশ চোখে না দেখলেও কলকাতার বাজারগুলোতে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে বড় আকারের ইলিশ। এমনই একটি ইলিশ গত মঙ্গলবার নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মন্দী নয়া বাজারে বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার টাকায়। ইলিশটির ওজন ছিল ২ কেজি সাড়ে ৩ শত গ্রাম। লম্বায় ছিল প্রায় দেড় ফুট। প্রস্থে ছিল ৮ ইঞ্চি। মলয় দাস নামে একজন মাছ বিক্রেতা ঢাকা থেকে মাছটি কিনে নরসিংদীর নয়াবাজারে নিয়ে যায়। মাছটি থালাতে উঠানোর পর এতবড় ইলিশ দেখে লোকজনের ভীড় জমে যায়। মাছটির দাম হাকা হয় ৩ হাজার টাকা কেজি। দাম শুনে অনেক ক্রেতার চোখই কপালে উঠে গেলেও মাধবদীর এক ভাগ্যবান ব্যবসায়ী মাছটি ৭ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে নরসিংদীর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা চৌধুরী মোঃ আবুল ফারাহ্’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাংলাদেশের ইলিশ সাধারনত ৩ জাতের হয়ে থাকে। এ মাছটি হচ্ছে হিলশা ইলিশ প্রজাতির। এ মাছটি সবচেয়ে বেশী বড় হয়। প্রবীন মাছ বিক্রেতারা জানিয়েছে, একসময় নরসিংদীর মেঘনায় ২/৩ কেজি ওজনের ইলিশ পাওয়া যেতো। নদী দুষণ ও অবাধে জাটকা নিধনের কারনে মেঘনার ইলিশ এখন বিলুপ্ত প্রায় হয়ে যাচ্ছে। তারা জানান, এখনো মেঘনায় মাঝে মাঝে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ধরা পড়ে। জেলা মৎস্য বিভাগ এবং নরসিংদী জেলা প্রশাসন সচেতন ও তৎপর হলে প্রতিবছরই মেঘনা থেকে বড় আকারের ইলিশ সংগ্রহ সম্ভব হবে।
ফরমালিন ও ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে আমার ভূমিকা হবে আপোষহীন
-নরসিংদীর নবাগত জেলা প্রশাসক

বুধবার নরসিংদীতে জাতীয় মত্স্য সপ্তাহ ২০১৪ উদযাপিত হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে মত্স্য সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন নরসিংদীর নবাগত জেলা প্রশাসক আবুহেনা মোরশেদ জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী। নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে জেলা প্রশাসক আবুহেনা বলেছেন, ফরমালিন ও ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে আমার ভূমিকা হবে আপোষহীন। যার কাছেই ফরমালিন ও ভেজাল যুক্ত খাবার পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের কাজ মানুষকে শাসন করা নয়, মানুষকে সেবা দান করা। একজন জেলা প্রশাসক সরকার ও জনগনের মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, জাতি হিসেবে আমরা মাছে ভাতে বাঙালী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু জনসংখ্যার আধিক্য এবং শিল্প কারখানা বৃদ্ধি ফলে ফসলী জমি ও জলাশয় কমে এদেশ থেকে মাছের সংখ্যা আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে। সর্বোপরি বিষাক্ত শিল্পবর্জ্য, মাছের বংশ নির্বংশ করে দিচ্ছে। এ অবস্থা দুরীকরন করতে না পারলে মাছ একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা চৌধুরী মোঃ আবুল ফারাহ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চিনিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম.এন জামান, মৎস্য চাষী হাজী মোঃ নুরুল হক, ইউপি চেয়ারম্যান বিশিষ্ট মৎস্য চাষী হাজী আঃ মোমেন, বাবু জয়দেব বর্মন, এনজিও ব্যক্তিত্ব সফল মৎস্য চাষী সফুরা বেগম।
নরসিংদীতে শিশু শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেছে লম্পট দুলাভাই

শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে গিয়ে ৭ বছর বয়সী শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেছে সেলিম নামে এক লম্পট দুলাভাই। গত ১ রমজানের দিন ইফতারের সময় রায়পুরা উপজেলার খলাপাড়া গ্রামে এই বর্বর কান্ডটি ঘটেছে। এলাকার জনগন লম্পট দুলাভাই সেলিমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। গতকাল বুধবার ধর্ষিতা শ্যালিকাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা সেলিম ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করে। মাস ছয়েক আগে সে রায়পুরা উপজেলার খলাপড়া গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের কন্যা গার্মেন্টস শ্রমিক জুয়েনা আক্তারকে বিয়ে করে। রমজান উপলক্ষে গত ৩০ জুন সে তার স্ত্রী জুয়েনাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে যায়। সন্ধ্যায় প্রথম রমজানের ইফতার উপলক্ষে সকলের ব্যস্ত থাকার সুযোগে লম্পট দুলাভাই সেলিম শিশু শ্যালিকাকে ডেকে পাশ্ববর্তী একটি ধইনচা ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে সে শ্যালিকাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে থাকলে শ্যালিকার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে তাকে লোকজন শিকল দিয়ে বেধে রেখে রায়পুরা থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষক দুলাভাই সেলিমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে রায়পুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
