চারঘাট প্রতিনিধিঃ উপজেলা প্রশাসন আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ২৬জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে আলোচনা সভা ও ক্ষুদ্র নৃতাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শিরীন মাহবুবা এর সভাপতিত্বে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল সাবরিন। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রুহুল আমীন, কৃষি কর্মকর্তা একেএস মনজুরে মাওলা, সমাজসেবা কর্মকর্তা মনিরা খাতুন ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ, ক্ষুদ্র নৃতাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর সভাপতি ষষ্ঠী পাহাড় প্রমুখ। শেষে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ বরাদ্দ তহবিল থেকে ক্ষুদ্র নৃতাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর ২৮ জন ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে ১ হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
চারঘাটে চিটাগুড় চিনি আটা ও রং মেশানো গুড় ভ্রাম্যমান আদালতে ধ্বংস ও জরিমানা

রাজশাহীর চারঘাটে চিটাগুড়, চিনি, আটা ও রং মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল গুড়। রমজান মাসের বাড়তি গুড়ের বাজার ধরতে রাতদিন চলছে এই সব কারখানা। বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমান আদালত চারঘাটের পাঁচটি ভেজাল গুড়ের কারখানায় অভিযান চালিয়ে ব্যাপক পরিমান গুড় ধ্বংস করেছে এবং তিনজন গুড় ব্যবসায়ী ও কর্মচারীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
রাজশাহী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আক্তার এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে বিএসটিআই এর কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ছিলেন। এছাড়াও অভিযান শেষের দিকে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল তাদের সঙ্গে যোগ দেন। চারঘাট থানার পুলিশ এতে সহযোগিতা করে। আদালত সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই অভিযান চলান। আদালত ভেজাল গুড় তৈরির বিষয়টি হাতে নাতে ধরে ফেলেন। আদালত গুড়ের রং তৈরির জন্য বিশেষ ধরনের রং (খাদ্য রং নয়) ও সোডিয়াম হাইড্রো সালফিট ১০/১২ ড্রাম চিটা গুড় ও কারখানায় প্রস্তুত ভেজাল গুড় ধ্বংস করেন। এছাড়াও গুড় তৈরির কড়াই চুলা ও অন্যান্য উপাদান ধ্বংস করে ফেলেন।
তারা প্রথমেই উপজেলার মেরামতপুর দিড়িপাড়া গ্রামের হাশেম আলীর কারখানায় অভিযান চালান। এ সময় তার চুলায় ভেজাল গুড় তৈরি হচ্ছিল। আদালতের নির্দেশে পুলিশ এই গুড় নষ্ট করে ফেলে, চুলা ভেঙে ফেলে, চার ড্রাম চিটা গুড় ফেলে দেয়। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে হাশেম পালিয়ে যান। আদালত তার কর্মচারী রমজান আলীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের কারখানাতে গিয়েও চুলায় ভেজাল গুড় জ্বাল হতে দেখে তা নষ্ট করে দেওয়া হয়। তার চার ড্রাম চিটাগুড় ধ্বংস করা হয়। এছাড়াও গুড় তৈরির অন্যান্য কৃত্রিম উপকরণ ধ্বংস করা হয়। এ সময় রফিকুল ইসলাম পালিয়ে যান।
একইভাবে মাজদার রহমানের কারখানার তিন ড্রাম চিটা গুড় ধ্বংস করা হয়। চুলার ভেজাল গুড় ফেলে দেওয়া হয়। চুলা ভেঙে দেওয়া হয়।
অভিযানচলাকালে এলাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী গুড় বিক্রেতা মজের মোল¬া নিজেকে সরকারি দলের একজন নেতা পরিচয় দিয়ে আদালতকে কাজ করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি তার গুড় ভালো দাবি করেন এবং কিছুতেই তিনি তার গুড় ফেলে দিতে দেবেন বলে ঘোষণা দেন। তারপরেও আদালত তার গুড় ফেলে দেন। তার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সঙ্গে সঙ্গে জরিমানার টাকা আদায় করেন। কর্মচারী রেজু আহাম্মেদকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
একইভাবে গুড় ব্যবসায়ী বুলবুল হোসেনের কারখানায় অভিযান চালিয়ে কিছু গুড় ধ্বংস করা হয়।
স্থানীয় গুড় ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান মাসে শরবতের জন্য ব্যবহƒত বাড়তি গুড়ের প্রয়োজন পড়ে। গুড়ের বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য চারঘাটের ভেজাল গুড় ব্যবসায়ীরা উঠে পড়ে লেগেছেন। উপজেলার মেরামতপুর দিড়িপাড়া, পিরোজপুর ঢালিপাড়া, কাঁকড়ামারী, চাঁনপুর, কাঁকড়ামারী ঘোষপাড়া, পরানপুর, রউথাসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এই গুড় তৈরি হচ্ছে।
ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আক্তার বলেন, রমজানের আগেই এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। পুরো রমজান মাস জুড়েই অভিযান চলবে।
