তাপস চন্দ্র সরকার, কুমিল্লা : কুমিল্লা নগরীর একটি চাইনিজ রেস্তোরা ও পার্টি সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে কুমিল্লার চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের চক্ষু বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ জুন শনিবার সকাল ১১টায় ন্যাশনাল আই কেয়ার ও সাইট সেভার্স এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওই সেমিনারে শিশুদের চক্ষু রোগ নিয়ে দিনব্যাপী ব্যাপক মতবিনিময় ও বৈজ্ঞানিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই বিষয়ে ঢাকা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সিটিটিউট ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞগণ ঢাকা থেকে এসে এই সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তারা হলেনÑ ডা. খালেদ রেজা, ডা. মাশরিকা মতিন, ডা. শোভনা আলম। কুমিল্লা থেকে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হাবিব আব্দুল্লাহ সোহেল, কুমেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কেএ মান্নান, ডেপুটি সিভিল সার্জন ও জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি কুমিল্লা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ডা. একে এম আব্দুস সেলিম, বিশিষ্ট নারী নেত্রী পাপড়ি বসু, ডা. নাজমুস সাদাত পিলু, ডা. ফিরোজ কবির প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন Ñ শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো: হাবিবুর রহমান, ডা. মো: বেলাল, ডা. মো: আব্দুল কাইয়ূম, ডা. নিলুফা পারভীন, ডা. রায়হানা সুলতানা বেগম, আলহাজ্ব ডা. মো: মোহসিউর রহমান চৌধুরী, ডা. এমকে ঢালি, ডা. মো: দেলোয়ার হোসেন, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মো: হাবিবুর রহমান, ডা. রোমানা বেগম সুইটি, ডা. মো: জাবেদ ইকবাল, ডা. মো: জাহাঙ্গীর আলম, ডা. মো: আরিফুল ইসলাম প্রমুখ। সহযোগীতায় ছিলেন- জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি কুমিল্লার প্রকল্প সমন্বয়ক তপন সেন গুপ্ত, মো: রফিকুল ইসলাম, মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ। সেমিনারে জেলা বিএমএ নেতা ও ডেপুটি সিভিল আলহাজ্ব ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী উপস্থিত সকল চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে জানান – বিশ্বে ৭৫% অন্ধত্ব প্রতিরোধযোগ্য, প্রতি ৫ সেকেন্ডে একজন লোক অন্ধ হচ্ছে এবং প্রতি মিনিটে একজন শিশু অন্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশে বছরে ৪০ হাজার শিশু অন্ধ হচ্ছে এবং তাদের মধ্যে ১২ হাজার শিশু শৈশবকালীন ছানি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের সমাজে ‘লক্ষী টেরা’ বলে শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে না-যা শিশুদের জন্য একটি অন্ধত্বের ভয়াবহ কারণ। বাসায় অভিভাবকদের এবং স্কুলে শিক্ষকদের শিশুদের চক্ষু সমস্যাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হবে এবং স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদেরও এই বিষয়ে শিশুর জন্মের পর থেকেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হবে। কুমিল্লা জেলার সকল প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর ১৫ জন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ‘ক্ষুদে ডাক্তার’ গঠন করে স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের ওজন, উচ্চতা ও দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করানো হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নজরদারিতে এই কার্যক্রম সচল থাকলে শিশুদের অন্ধত্ব চিহিৃত হয়ে তা দিন দিন আরো কমতে থাকবে।