শ্যমলবাংলা ডেস্ক : প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে খালেদা জিয়া জড়িত থাকতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি। তিনি ৪ জুন বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই মন্তব্য করেন। এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশবাসীর অনেকেই মনে করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে বেগম খালেদা জিয়া ‘ইনভলব’, তদন্ত করলে তার যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। তা না হলে কেন তিনি দু-বার ক্ষমতায় গিয়েও জিয়া হত্যার বিচার করলেন না? মঙ্গলবার জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে দেয়া বিএনপির বক্তব্যের জবাব দিতেই ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বলে জানায় সরকারী সংবাদ সংস্থা বাসস।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি আবার কোনদিন ক্ষমতায় গেলেও জিয়া হত্যার বিচার করবে না। কারণ, বিচার করলে তাদের ষড়যন্ত্রের কথাই দেশবাসী জানতে পারবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন দাবি করে হানিফ বলেন, নৃশংস এই হত্যা করার পর খুনি মোশতাক কোন আস্থায়, বিশ্বাসে, সংযোগে, যোগসূত্রে নির্ভরতায় জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করেছিলেন? বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার আগে ও পরে খুনি রশিদ-ফারুক চক্র কতোবার, কি কারণে, কি প্রয়োজনে জিয়াউর রহমানের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন?
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নাই থাকবেন, তাহলে সেনাপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিরুদ্ধে কেন কোনো ধরনের আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার কাছে জিজ্ঞাসা করি, জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বিএনপিই ক্ষমতায় ছিল। তারপরও বিএনপি একাধিকবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন ছিল। জিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিচার কেন করেননি?
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে মতিয়া চৌধুরী জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সাক্ষী প্রমাণ থাকলে আপনি মামলা করেন। তখন মতিয়া চৌধুরী বলেছিলেন, ‘সোয়ামী (স্বামী) মরছে আপনার, আর মামলা করব আমি?’ খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায় তিনি জিয়া হত্যার বিচার কখনো করবেন না।
অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক, স্বৈরঅপশক্তির বিরুদ্ধে ইষ্পাতদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাবো আসুন আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান করি। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল, আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণের সংগ্রামকে আরও বেগবান করি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
