মেহের আমজাদ,মেহেরপুর : অনাবৃষ্টির কারনে চলতি বছর মেহেরপুর জেলায় লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে। শুরুতে লিচুর মুকুল ও গুটি ভালো আসলেও খরার কারনে পূড়ে গেছে অধিকাংশ । তবে কিছু বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীর কেনা বাগানে লিচু আসলেও সে সব লিচুতে বেশির ভাগ দেখা গেছে স্পট, ফেটে গেছে এবং অপুষ্ট ।
এসব লিচু বাজার জাত করতে গিয়ে দাম পায়নি বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা । ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
স্বাদের দিক থেকে মেহেরপুরের মৌসুমি ফলের সুনাম আছে সারা দেশে কিন্তু বৈশাখ মাসের শুরু থেকে বৃষ্টির দেখা না মেলায় মেহেরপুর জেলায় লিচুর ফলন বিপর্যয় দেখা দেয়। জেলা কৃষি অধিদপ্তরের সূত্র মতে চলতি বছর জেলায় লিচুর চাষ হয়েছে ৪’শ ৫০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় প্রথম দিকে গাছে লিচুর পর্যাপ্ত মুকুল এসেছিল। কিন্তু সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড রোদে গাছের লিচু ফেটে, শুকিয়ে ঝরে পড়ে গেছে। প্রতি বছর জেলায় গড় বৃষ্টিপাত হয় ৯০০ থেকে ১০০০ মিলিমিটার কিন্তু চলতি বছর জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩০ মিলিমিটার। ফলে বৃষ্টি না হওয়ায় লিচুর আকার বড় হয় নি। নষ্ট হয়েছে লিচুর স্বাদ। পুষ্ট না হওয়ায় লিচু তোলার সময় লিচুর স্বাদ হয়েছে টক। মেহেপুর খুচরা বাজারে আঁটি লিচু বিক্রী হতে দেখা গেছে এক পৌন অর্থাৎ ( ৮০পিস ) লিচু বিক্রি হয়েছে ১’শ ৪০থেকে ১’শ ৮০ টাকা পর্যন্ত। এখন আঁটি লিচু বাজারে না পাওয়া গেলেও বাজারে উঠেছে বোম্বাই লিচু, বোম্বাই লিচু বিক্রী হচ্ছে ১শ’৮০ টাকা থেকে ২শ’৭৫টাকা । তবে লিচুর মান ভালো না কিন্ত দাম বেশি হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারন ক্রেতারা।
লিচু ক্রেতা ফয়সাল আহম্মেদ জানান, মেহেরপুরের লিচু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় লিচু পরিপক্ক হওয়ার আগেই গাছ থেকে ভেঙ্গে ফেলেছে। বাজার ধরতে অপুষ্ট লিচু গাছে ¯েপ্র করে পাকিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে লিচুর স্বাদ নষ্ট হচ্ছে।
মহেশপুর থেকে মেহেরপুরে লিচু কিনতে আসা লিচু ব্যবসায়ী আসাদুল জানান, মেহেরপুরের লিচুর মান ও স্বাদ ভালো হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর মেহেরপুরে লিচু কিনতে এসেছি। কিন্তু জেলার বাইরে থেকে লিচু কিনতে এসে লিচুর মান ও দাম বেশি হওয়ায় আমরা হতাশ। বেশি দামে লিচু কিনে বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে লিচুর দাম বেশি হয়ে যাচ্ছে।
লিচু বাগান মালিক কাউসার জানান, একই গাছ থেকে গত বছর লিচু পেয়েছেন পাঁচ কাউন সেই গাছ থেকে এবছর লিচু পাচ্ছেন এক কাউন। ১৩ লাখ টাকায় লিচু বাগান কিনে চলতি বছর লিচুর ফলন ভালো না হওয়ায় ৫ লাখ টাকারও লিচু বিক্রি হচ্ছে না। ফলে লোকশান গুনতে হবে দ্বিগুন।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চৈতন্য কুমার দাস জানান, চলতি বছরে জেলায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় লিচু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। লিচুর মান ভালো হয় নি। চাষিদের বাগানে পরিচর্যার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
