জিয়াউর রহমান জিয়া, রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) : এক মাসে তিনবার ডাকাতি হওয়ার পর ফের ব্রহ্মপুত্র নদে প্রকাশ্যে দিবালোকে নৌকা ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতের কবলে পড়ে ১০ জন যাত্রী গুরতর আহত হয়েছে। তাদের গাইবান্ধা ও রাজিবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বার বার ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। যারা নৌরুটে ব্যবসা করছে তাদের নৌকা বার বার ডাকাতির ফলে ব্যবসায়ীরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ঘটনাটি ঘটেছে, ২৮ মে বুধবার বিকেল ৫ টার দিকে রাজিবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তি ছেরিমারা চরে।

স্থানীয়রা জানায় কুড়িগ্রামের রাজিবপুর নৌকাঘাট থেকে একটি যাত্রীবাহি নৌকা গাইবান্ধা বালাসী ঘাটের উদ্দেশ্যে দুপুর ১২ টার দিকে ছেড়ে যায়। গাইবান্ধা সদর থানার অধিনে ছেরিমারাচরে পৌঁছলে একদল মুখোশপড়া ডাকাতদল তাদের গতিরোধ করে নৌকার মাঝিসহ যাত্রীদের এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে দশজনকে গুরতর আহত করে। এ সময় ব্যবসায়ীদের ১০ লাখ ৫ হাজার নগত টাকা, মোবাইলফোন, মোটরসাইকেল, মহিলাদের স্বর্ণের অলংকারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
চরনেওয়াজী এলাকার নৌকার মাঝি আমিনুল ইসলাম জানায়, রাজিবপুর ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে যাবারপর আর কোন জায়গায় লোক উঠাইনাই। তারপরও ছেরিমারা চরে যাবার সাথে সাথে ৫০ থেকে ৬০ জনের ডাকাতদল রামদা, ছোরা, বন্দুক নিয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার নৌকা থামাইতে দেরি অয়ছে দেইক্যা ওরা আমারেই বেশি মারছে। যাত্রীদের সবকিছু আমার চোখের সামনে নিল আমরা কিছুই করবার পারলাম না।
ওই নৌকার ডাকাতির শিকার এনজিও কর্মী ফারুক মিয়া জানান, কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই ডাকাতের দল আমাদের নৌকা পাকড়াও করে আমার একটি মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, মোবাইলফোন ও নগদ টাকা নিয়ে যায়।
রাজিবপুর বাজারের মাছের ব্যবসায়ী কালাম ব্যাপারী জানান, এই নদীপথে ৪০ বছর ধইরা মাছের ব্যবসা করি। গাইবান্ধা টাউন থ্যাইক্যা মাছ নিয়া রাজিবপুর বাজারে বেছি। কিন্তুক বছরে ১ বার ডাকাতি অয় । এই বার মাসে ৪ বার ডাকাতি অয়ল। অহন আমার সব শেষ। আমি বউপোলাপান নিয়া কেমনে বাছুম ? তার মত অনেক ব্যবসায়ীই সব হারিয়ে পথে বসেছে।
বার বার একই স্থানে ডাকাতির বিষয়ে ফজলুপুর ইউপি চেয়ারম্যান জানান- এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে অনেকবার প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু ডাকাতি বন্ধ হয় নি।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ রেজ্জাকুল ইসলাম জানান- ডাকাতির বিষয়টি আমার জানা নেই।
