তাপস কুমার, আত্রাই (নওগাঁ) : আমাদের অতি চেনা-জানা উপকারী প্রধান কয়েকটি পাখির মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো শালিক পাখি। ছোট আকৃতির ধূসর রঙের এই পাখিগুলো অত্যন্ত নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের। ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে আমাদের কৃষিপণ্য উত্পাদনে সহায়তা করে বলে আমরা এদের উপকারী পাখি বলি।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, আগে ক্ষেত-খামারে অসংখ্য শালিক পাখি দেখা যেতো। সকাল-সন্ধ্যায় কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত করে তুলতো সেকালের পল্লীগাঁয়ের বাঁশবাগান। মনে হতো এ যেন শালিক পাখির হাট। শালিক পাখির কিচির-মিচির শব্দেই ভেঙে যেতো সাধারণ মানুষের ভোরের ঘুম। কিন্তু বড়োই দুঃখের বিষয়! যত্রতত্র ফসলি জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার আর অবাধে পাখি নিধনের ফলে অতি চেনা এই পাখি আজ হারিয়ে যাচ্ছে। মূলত শালিক পাখি আমাদের কোনো ক্ষতি করে না। বরং এরা কৃষিজমির ক্ষতিকর পোকা-মাকড় খেয়ে আমাদের ক্ষেতের ফসল রক্ষা করে। অথচ পরোপকারী এই পাখিগুলোই অবাধে নিধন করা হচ্ছে। পাখি শিকারীর দল বিষটোপ, এয়ারগানসহ বিভিন্ন ফাঁদ পেতে শালিক নিধন করেছেন। দেশে পাখি নিধন আইন আছে কিন্তু নেই শুধু এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ। বলা চলে আইনের এই দুর্বলতার কারণেই এক শ্রেণীর মানুষ পাখি শিকারকে এখন মূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এরা শালিকসহ দেশি-বিদেশি সব পাখিই নিধন করছে এবং প্রকাশ্যে তা বাজারে বিক্রি করছে।
মূলত পাখি যে শুধু পরিবেশের ভারসাম্যই রক্ষা করে তা নয়, প্রকৃতির সৌন্দর্যও বাড়ায়। তাই শালিকসহ সব শ্রেণীর পাখি নিধন বন্ধের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহে পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা এখন সকলের দাবি। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পরিবেশ বান্ধব সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।