শ্যামলবাংলা ডেস্ক : ঝড়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে প্রায় ৩শ জন যাত্রী নিয়ে ‘এমভি মিরাজ-৪’ নামে একটি লঞ্চ ডুবে গেছে। ১৫ মে বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে ওই লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হচ্ছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পাঁচগাও গ্রামের জামাল হোসেন সিকদার (৫০), তার ছেলে আবিদ হোসেন সিকদার (২৮) টুম্পা বেগম (৩০), সেতারা বেগম (৫০) ও আরিফ হোসেন (১১)। বাকীদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এ দুর্ঘটনায় শতাধিক যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন। জানা যায়, বৃস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকার সদর ঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর যাবার পথে মিরাজ লঞ্চটি বিকেল সোয়া তিনটার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুরের ষোলআনা নামক স্থানে মেঘনা নদীতে হঠাৎ কাল বৈখাশীর ঝড়ের কবলে পড়ে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই লঞ্চটি মেঘনার বুকে ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে প্রায় আড়াই থেকে ৩ শতাধিক যাত্রী ছিল। লঞ্চ ডুবির সাথে সাথে অনেক যাত্রী নদী থেকে সাতার কেটে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শতাধিক যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছে বেচে যাওয়া যাত্রীরা। লঞ্চের যাত্রী আব্দুল রাজ্জাক জানিয়েছেন, লঞ্চের সারেংয়ের বুদ্ধিমত্তার অভাবে অনেক যাত্রীকেই প্রান দিতে হলো। একটু বুদ্ধি করে সারেং লঞ্চটিকে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি মেঘনার শাখা নদীতে নিয়ে গেলে হয়তো এতো যাত্রীর প্রানহানি ঘটতো না।
ওই ঘটনার পর পরই মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল, ভারপ্রপ্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার, এএসপি (সদর সার্কেল) এমদাদ হোসেন, এডিশনাল ডিআইজি (অপরাধ) শফিকুর রহমান ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়ভাবে ৪০-৫০টি ট্রলার সিবোট দিয়ে উদ্ধার তত্পরতা শুরু করে। উদ্ধার কাজে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিআইডাব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যায় ও দুর্বার দুর্ঘটনা স্থলে এসে পৌঁছে লঞ্চটি শনাক্ত করার কাজ শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাত লঞ্চটি শনাক্ত করতে পেরেছে উদ্ধারকারী জাহাজ।
নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে সন্ধ্যায় মেঘনায় পৌঁছেছেন। লঞ্চ থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় ২৮ জন যাত্রীকে নিরাপত্তা দিয়ে তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে দির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া স্বজনের খোঁজে যারা মেঘনা পাড়ে এসেছেন তাদেরকেও নিরাপত্তা ও থাকার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
