বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পুত্রকে শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরের বারান্দার অন্ধকার কুটিরে ৩ মাস যাবত আটকে রেখেছে পাষন্ড পিতা। রবিবার উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা গ্রামের কাজল পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, টিনের ঘরের বারান্দায় একটি অংশে টিনের বেড়া দিয়ে ছোট একটি কুটিরি তেরি করে ২২ বছরের যুবক মানষিক রোগি তুষারকে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রেখেছে তার পাষন্ড পিতা বাদশা ফকির। তুষার সেখানে দিনরাত ছটফট করে আর সামান্য ফাঁকা অংশ দিয়ে মাঝে মধ্যে বাহিরে তাকিয়ে থাকে। এমন অমানবিক নির্যাতনের কারণে ওই কুটিরে এখন বস্ত্রহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে তুষার। তিন মাস আগে এই যুবককে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রাখা হয়। ঘর থেকে তাকে আর বের হতে দেয়া হয়নি। অসহায় তুষারকে বাধ্য হয়ে ছোট কুটিরের মধ্যেই এখন মল-মুত্র ত্যাগ করেত হয়। বাহিরের আলো বাতাস গত তিন মাস হলে তার শরীরে লাগেনি। নিজের মল মুত্রের গন্ধের মধ্যেই দিন রাত পার হচ্ছে তুষারের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন দিন সে শুকিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তুষারের মা রুবি বেগমে জানান, ৬ বছর আগে বগুড়া আযিযুল হক কলেজে পড়ার সময় ছেলে তুষার পাগল হয়। ডাক্তারের চিকিৎসায় ভালও হয়েছিল। নিয়মিত ঔষধ না খাওয়ার কারণে ৬ মাস আগে আবার সামান্য পাগলামী শুরু করে। তুষারকে বিনা চিকিৎসায় ওর বাপ তিন মাস হলে আটকে রেখেছে। কোন মতেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে দিচ্ছেনা। ডাক্তারের চিকিৎসা পেলে আমার ছেলে আবার ভাল হয়ে যাবে। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী শত চেষ্টা করেও স্বামীর বাঁধার কারণে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছিনা। বাদশা মিয়ার সাথে কথা হলে সে জানায়, তুষারকে মানষিক ডাক্তারের চিকিৎসা করিয়েছি কোন কাজ হয়নি। আমার মধ্যে আলৌকিক শক্তি এসেছে আমিই তাকে ভাল করব। অন্য কোন ডাক্তার কবিরাজের চিকিৎসা করাবো না। ওই গ্রামের অনেকেই জানিয়েছেন, গরু-ছাগল বেঁধে রাখলেও গোয়াল ঘর থেকে বের করতে হয়। কিন্তু তুষারকে এই গরমের মধ্যে যে ভাবে আটকে রাখা হযেছে এটা কোন মানুষের কাজ হতে পারেনা। তুষারের চিকিৎসা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
